পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৪৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মনের কথা ঠিক ধরিয়াছে। তাহার হাসিবার ভঙ্গিতে অপু একথা বুঝিল । বেশ বুদ্ধিমতী তো অপর্ণা !••• সে বলিল-হঁ্যা একটা কথা অপর্ণা, তোমাকে এবার কিন্তু নিয়ে যাব দেশে, যাবে তো ? অপর্ণা বলিল-মাকে বলো, আমার কথায় তো হবে না —তুমি রাজী কি না বলে আগে—সেখানে কিন্তু কষ্ট হবে। অপু একবার ভাবিল-সত্য কথাটা খুলিয়াই বলে। কিন্তু সেই পুরাতন গর্ব ও বাহাদুরির কোক !—বলিল-আবিশ্যি একদিন আমাদেরও সবই ছিল। সেখানে থাকতুম -আমার পৈতৃক দেশ-এখন তো দোতলা মস্ত বাড়ি-মানে সবই-তবে শরিকানী মামলা আর মানে ম্যালেরিয়ার-বুঝলে না ? এখন যেখানে থাকি, সেখানে দু’খানা মেটে চালাঘর, তাও মা মারা যাওয়ার পর আর সেখানে যাই নি, তোমাদের মত বি-চাকর নেই, নিজের হাতে সব করতে হবে।--তা আগে থেকেই ব’লে রাখি। তুমি হলে জমিদারের মেয়ে অপর্ণা কৌতুকের সুরে বলিল-আছিই তো জমিদারের মেয়ে। হিংসে হচ্ছে বুঝি ? একটু থামিয়া শাস্ত সুরে বলিল-কেন একশ’বার ওকথা বলে ? -- “তুমি কাল মাকে বাবাকে বলে রাজী করাও, আমি তোমার সঙ্গে যেখানে নিয়ে যাবে যাবো, গাছ-তলাতেও যাবো, আমি তোমার সব কথা জানি, পুলুদা মায়ের কাছে বলছিল, আমি সব শুনেছি ? যেখানে নিয়ে যাবে, নিয়ে চল, তোমার ইচ্ছে আমার তাতে মতামত কি ? রাত্রে দুজনে কেহ ঘুমাইল না। বধূকে লইয়া সে রওনা হইল। শ্বশুর প্রথমটা আপত্তি তুলিয়াছিলেননিয়ে তো যেতে চাইছ বাবাজী, কিন্তু এখন নিয়ে গিয়ে তুলবে কোথায় ? চাকরি-বাকরি ভাল কর, ঘর-দোর ওঠাও নিয়ে যাবার এত তাড়াতাড়িটা কি ? সিড়ির ঘরে অপর্ণার মা স্বামীকে বলিলেন-হঁ্যাগ, তোমার বুদ্ধি সুদ্ধি লোপ পেয়ে যাচ্ছে দিন দিন-না কি ? জামাইকে ও-সব কথা বলেছ ? আজকালকার ছেলেমেয়েদের ধারণা আলাদা, তুমি জান না। ছেলেমানুষ জামাই, টাকাকড়ি, চাকরিবাকরি ভগবান যখন দেবেন তখন হবে। আজকালের মেয়েরা ও সব বােঝে না, বিশেষ ক'রে তোমার মেয়ে সে ধরণেরই নয়, ওর মন আমি খুব ভাল বুঝি। দাও গিয়ে পাঠিয়ে ওকে জামাইয়ের সঙ্গে-ওদের সুখ নিয়েই সুখ । উৎসাহে অপুর রাত্রে ঘুম হয় না। এমন অবস্থা, কাল সারাদিন অপর্ণাঙ্গে $bቶ።”