পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৫৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তীরবর্তী তপোবন, হোনধূমপবিত্র গোধূলির আকাশতলে বিস্তৃত অগ্নিশালা, শ্রুগভাণ্ড, অজিন, কুশ, সমিধ, জলকলস, চীর-কৃষ্ণাজিন পরিহিত সজাপা মুণিগণের বেদপাঠ ধ্বনি শান্ত গিরিসানু-বনজ কুসুমের সুগন্ধ-গোদাবরীতটে পুন্নাগ নাগকেশরের বনে পুষ্প-আহরণরত সুমুখী আশ্রম বালকগণ “কৃশাঙ্গী রাজবধূগণ • • • ক্ষীণজ্যোৎস্নায় নদীজল আলো হইয়া উঠিয়াছে, তীবে স্থলবেতাসের दम भबूद्ध उाकिऊछ’ সে যেন স্পষ্ট দেখিল, এই নিবিড় অজানা অরণ্যানীর মধ্য নির্ভীক, কবাটকক্ষ, ধনুপ্তপ্রাণি, প্রাচীন রাজপুত্রগণ সকল বিপদকে অতিক্রম করিয়া চলিয়াছেন। দূরে নীল মেঘের মত পরিদৃশ্যমান ময়ুর নিনাদিত ঘন বন, দুৰ্গম পথের নানা শ্বাপদ, রাক্ষসে পূর্ণ খন্দ, গুঙ্গা, গঙ্গাবর, মহাগজ ও মহাব্যাস্ত্র দ্বারা অধূষিত-অজানা মৃত্যুসংস্কুল-চারিধারে পর্বতরাজিব ধাতুরঞ্জিত শৃঙ্গসকল আকাশে মাথা তুলিয়া দাডাইয়া আছে-কুন্দগুল্ম, সিন্দুবার ; শিরীষ, অজুন, শাল, নীপ, বেতস, তিনিশ, ও তমাল তরুতে শুষ্ঠামায়মান গিরিসানু - শরদ্বারা বিদ্ধ রুরু ও পৃষত মৃগ আগুনে ঝলসাইয়া খাওয়া, বিশাল ঈক্ষুদী তরুমূলে সতর্ক রাত্রি যাপন ওঝাজী উৎসাহ পাইয়া অপুকে একটা পুটলি খুলিয়া একরাশ সংস্কৃত কবিতা দেখাইলেন, গর্বের সহিত বলিলেন, বাবুজী, ছেলেবেলা থেকেই সংস্কৃত কবিতায় আমার হাত আছে, একবার কাশী-নরেশের সভায় আমার গুরুদেব ঈশ্বর শবণ আমায় নিয়ে যান। একজোডা দোশালা বিদায় পেয়েছিলাম, এখনও আছে । ত্রিশ পয়ত্রিশ বছর আগেকার কথা --তারপর তিনি অনেকগুলি কবিতা শুনাইলেন, বিভিন্ন ছন্দের সৌন্দর্য ও তাহাতে র্তাহার রচিত শ্লোকের কৃতিত্ব সরুল উৎসাহে বর্ণনা করিলেন । এই ত্রিশ বৎসর ধরিয়া ওঝাজী বহু কবিতা লিখিয়াছেন, এখনও লেখেন, সবগুলি সযত্ন সঞ্চয় করিয়া রাখিয়াও দিয়াছেন, একটিও নষ্ট হইতে দেন নাই, তাহাও জানাইলেন । একটি অদ্ভুত ধরণের দুঃখ ও বিষাদ অপুর হৃদয় অধিকার করিল। কত কথা মনে আসিল, তাহার বাবা এই রকম গান পাচালি লিখিতেন তাহার ছেলেবেলায়। কোথায় গেল সে সব ? যুগ যে বদল হইয়া যাইতেছে। ইহারা তাহা ধরিতে পারে না। ওঝাজীর এত আগ্রহের সহিত লেখা কবিতা কে পন্ডিবে ? কে আজকাল ইহার আদর করিবে ? কোন আশা ইহাতে পুরিবে: ওঝাজীর ? অথচ কত ঐকাস্তিক আগ্রহ ও আনন্দ ইহাদের পিছনে আছে। চাপদানীর পোস্টাফিসে কুড়াইয়া পাওয়া সেই ছোট মেয়েটির নাম-ঠিকান-ভুল পত্রখানার মতই তাহা ব্যর্থ ও নিরর্থক হইয়া যাইবে । Rbres