পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৬১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাশের চুর্ণ কুন্তলে হাত বুলাইতে বুলাইতে দৃঢ়স্বরে বলিল-তুমি আমি ছেলেবেলার সাখী, লীলা-আমরা কেউ কাউকে ভুলব না-কোনো অবস্থাতেই না । এতদিন ভুলি নি-ও কখনো লীলা । লীলার সারাদেহ শিহরিয়া উঠিল--যাহ আজ অপুর মুখে, কথার সুরে ডাগর চোখের অকপট দৃষ্টিতে প্রকাশ পাইল-জীবনে কোনদিন কাহারও কাছ হইতে তাহা সে কখনও পায় নাই-আজ সে দেখিল অপুকে সে চিরকাল ভালবাসিয়া আসিয়াছে—বিশেষ কবিয়া অপুর মাতৃবিয়োগের পর লালদীঘির সামনের ফুট পাতে তাকে যেদিন শুষ্ক নিরাশ্রয় ভাবে বেড়াইতে দেখিয়াছিল-সেদিনটি হইতে । --অপুর চমক ভাঙিল-লীলা কখন তাহাব বক্ষে মুখ লুকাইয়াছিলতাতার অশ্লাল্লাবিত পাণ্ডুর মুখখানি !-- অপু বাহিরে চলিয়া আসিল-সে অনুভব করিতেছিল। লীলার মত সে কাহাকেও ভালবাসে না-সেই গভার অনুকম্প মিশ্রিত ভালবাসা, যা মানুস্যকে সব ভুলাইয়া দেয়, আত্মবিসর্জনে প্রণোদিত করে। লীলাকে যে করিয়াই হউক সে সুখী করিবে। লীলাকে এতটুকু কষ্টে পড়িতে দিবে না, নিজেকে ছোট ভাবিতে দিবে না । যাহার ইচ্ছা লীলাকে ছাড়ক, সে লীলাকে ছাডিতে পারিবে না। সে লীলাকে কোথাও লইয়া যাইবেই।--এ অবস্থায় কলকাতায় থাকিলো লীলা বাচিবে না । বিশ্ব একদিকে-লীলার মুখের অনুরোধ আর একদিকে। সারাপথ ভাবিতে ভাবিতে ফিরিল ! দিন তিনেক পরে { বেলা আটটা । অপু সকালে স্নান সারিয়া কাজলকে সঙ্গে করিয়া বেড়াইতে বাহির হইবে-এমন সময় মিঃ লাহিড়ীর ছোট নাতি অরুণ ঘরে ঢুকিল। এককোণে ডাকিয়া লইয়া চুপি চুপি উত্তেজিত সুরে বলিল-শিগগির আহ্বান, দিদি কাল রাত্রে বিষ খেয়েছে । বিষ্য ! সৰ্বনাশ ! লীলা বিষ খাইয়াছে । কাজলকে কি করা যায়?--খোকা তুই-বরং-ঘরে থাক একা। আমি একটা কাজে যাচ্ছি। দেরী হবে ফিরতে । কিন্তু কাজলের চােখে ধূলো দেওয়া অত সহজ নয়। কেন বাবা ? কি কাজ ? কোথায় ? কত দেরি হতে পারে ?-“কোনমতে ভুলাইয়া তাহাকে রাখিয়া দুজনে ট্যাক্সি ধরিয়া লীলার বাসায় আসিল। আরও দুখানা মোটর Notes