পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৭২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

থেকে অরেঞ্জক্রাম-দেওয়া বিস্কুট এনেছি। তাই কাজলকে বলেছিলাম তোমরা এলে দেবার কথা। ভাগ্যিস তুই মনে করিয়ে দিলি খোকা অপু উঠিয়া ঘরে আনিতে গেল। হৈমন্তীদের বাড়ীতে অপু প্রায়ই যাতায়াত করে আজকাল। হৈমন্তীর বাবা-মা তাহাকে পাইলে সত্যই খুশী হন। সে গিয়া গল্পগুজব করিয়া জলখাবার খাইয়া বাড়ী ফেরে। কাজলও সঙ্গে যায়। মাঝে মাঝে গানের আসর বসে, হৈমন্তী আগে হইতে নিমন্ত্রণ করিয়া যায়। সাংস্কৃতিক আবহাওয়া অপু পছন্দ করে, ফলে এ বাড়ীর সহিত তাহাব ঘনিষ্ঠতা গডিয়া উঠিতে বেশী দেরী হয়। नांशें । অপু অনেক ভাবিয়া দেখিয়াছে, এক সারাজীবন কাটানো তাহার পক্ষে সম্ভবপর নহে । অপর্ণার কথা ভাবিয়াই সে অন্তর হইতে সায় পাইতেছিল না । কিন্তু পরে চিন্তা করিয়া দেখিল, অপর্ণার স্মৃতি তাহার মনের যে গোপন কন্দরে স্থায়ী রঙে আঁকা হইয়া গিয়াছে—সেখানে আর কাহারও স্থান নাই। কিন্তু হৈমন্তীকে সে অস্বীকার করিতে পরিবে না। সে যদি বলে-আমি হৈমন্তীকে ভালবাসি না, তবে তাহা মিথ্যা কথা হইবে। অপর্ণার স্মৃতিকে শ্রদ্ধার আলোয় বঁাচাইয়া রাখিয়াই সে বর্তমান সত্যকে মর্যাদা দিবে। একমাত্র ভয় ছিল কাজলকে লইয়া। কিন্তু কাজল ও হৈমন্তী পরস্পরকে নিকট-বন্ধনে বঁাধিয়াছে। সেদিক দিয়া চিন্তার আর কারণ নাই । একদিন অপু কথাটা হৈমন্তীর বাবার কাছে পাডিল। ভদ্রলোক আপত্তি করিলেন না। অপু সজ্জন, সুপুরুষ, বাজারে নামডাক হইয়াছে। সম্প্রতি বই লিখিয়া,ভাল উপার্জন করিতেছে। এমন পাত্রের সহিত বিবাহ না দিবার কোনো কারণ নাই। তিনি নিজেও বুদ্ধিমান এবং সাহিত্যরসিক। অপুর ব্যক্তিত্ব এবং রচনা-ক্ষমতা তাহাকে মুগ্ধ করিয়াছিল। তিনি মত দিলেন। দিনস্থির করিবার জন্য ভিতর-বাড়ী হইতে পঞ্জিকা আনানো হইল । কাজল চতুর্থ পরিচ্ছেদ বিবাহের পর মাস তিনেক কাটিয়াছে । বৃষ্টি তেমন হইতেছে না। আকাশের রঙ কটা, তামার মত। গরমে দেশস্কন্ধ লোক হঁপাইয়া উঠিয়াছে। মাটিতে বড় বড় ফাটল, বৃষ্টির জন্য আকাশের দিকে মুখব্যাদান করিয়া রহিয়াছে। س؟