অবতার & আবার ডাক্তার বলিতে আরম্ভ করিলেন —“আপনি অত শীঘ্র খুলি হবেন না ; কেন না, আপনার যে রোগ তা হৃৎপিণ্ডের অতিবৃদ্ধিও নয়, ফুসফুসের দুষ্ট স্ফোটকও নয়, পৃষ্ঠদগুস্থ মজ্জার কোমলতাও নয়। হাতটা দেখি।” ডাক্তার ঘড়ী ধরিয়া নাড়ী দেখিবেন মনে করিয়া অক্টেভ স্বকীয় আলখাল্লার আস্তিনটা সরাইয়া হাত বাড়াইয়া দিল। হাতের. কক্তিতে কিরূপ স্পন্দন হইতেছে তাহা না দেখিয়া ডাক্তার কাকৃড়ার *াড়ার মত অঙ্গুলীবিশিষ্ট তার থাবার মধ্যে, অক্টেভের সরু নীলশিরাবিশিষ্ট আদ্র হস্তটি জাপটিয়া ধরিয়া, উহা টিপিতে লাগিলেন, দলিতে লাগিলেন, মলিতে লাগিলেন, পরীক্ষা-পাত্রের সহিত চুম্বক-আকর্ষণের ৯ যোগ স্থাপনের জন্ত যেন ঐ-সব প্রক্রিয়া করিতে লাগিলেন । ঔষধপত্রে বিশ্বাস না করিলেও, এই-সব প্রক্রিয়ায় অক্টেভের একপ্রকার উৎকট অনুভূতি হইতে লাগিল। মনে হইতে লাগিল যেন ডাক্তার এইরূপে তার আত্মাকে নিংড়াইয়া বাহির করিতেছেন, তার গণ্ডস্থল হইতে মুক্ত একেবারে অন্তৰ্হিত হইল । r যুবকের হাত ছাড়িয়া দিয়া ডাক্তার বলিলেন :–“আপনি ততটা মনে করচেন না, কিন্তু আসলে আপনার অবস্থা খুবই গুরুতর ; বিজ্ঞান, --অন্ততঃ এখনকার প্রচলিত চিকিৎসা-শাস্ত্র এর কোনই প্রতিকার করতে পারবে না ; আপনার আর বঁাচ বার ইচ্ছা নাই; আপনার আত্মা অলক্ষিতে আপনার শরীর থেকে বিমুক্ত হচ্ছে। এ আপনার হিপ'কণ্ডিয়া’ও নয়, 'লিপমেনিয়া’ও নয়, আত্মহত্য-প্রবণতাও নয়—না, এ-সব কিছুই না। এ রকম রোগ অতি বিরল ও বড়ই কৌতুকাবহ । আমি যদি এর প্রতিবিধান না করি, তাহলে আপনি বেমালুম মারা যাবেন—অভ্যন্তরে কি বাহিরে, কোন বিকৃতির লক্ষণ প্রকাশ পাবে না । আমাকে ডাকবার এই ঠিক সময় ; কেননা এখন আপনার আত্মা !
পাতা:অবতার.djvu/২০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।