পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এবার আর সোনার মা জবাব দিতে পারলেন না। পুতু যে এসেছিল পাতাটাই তার প্রমাণ । তিনি সোনাকে বললেন, ‘সোনা, একথা তুই এতক্ষণ বলিসনি কেন ? সোনা বললে, ভুলে গিয়েছিলুম। আমার যে বড্ড খিদে পেয়েছিল তাই তাড়াতাড়ি দ্বধ খেতে গেলুম। সোনার মা পাতাটি বেশ করে নেড়ে-চেড়ে দেখলেন। সত্যিই এমন পাতা কেউ কখনো দেখেনি। তিনি পিদিম ধরে বেশ করে দেখলেন মেঝেতে কারু পায়ের দাগ আছে কি না । জানলা দিয়ে সুতে ঝুলিয়ে দেখলেন, সেখান থেকে মাটি তিরিশ হাত নিচে, আর দেয়ালের গা শেওলা পড়ে একেবারে পিছল। টিকটিকি ছাড়া সে দেয়াল বেয়ে কেউ উপরে উঠতে পারে না । সোনার মা খাতাঞ্চিকে পাতা দেখালেন । খাতাধি বললেন, ‘বেখে দাও, কোথেকে কী জংলি পাতা উড়ে এসেছে, আর ছেলেরা সব কী স্বপ্নে দেখেছে, তাই নিয়ে এত ভাবনার কী দরকার ? কিন্তু ছেলে-মেয়ের পুতুকে যে স্বপ্নেই দেখেছে – তা নয়। পুতু যে সত্যিই তাদের কাছে জানাগোনা করছে, খেলাঘরের খেলার সাথি হতে, তারও প্রমাণ সেইদিনই পাওয়া গেল । বাইরে দুপুর রোদ বাক্ট করছে –এমন গরম যে কেউ বাইরে নেই। কালবোশেখি আগুন ঝরে, কালবোশেখি রোদে পোড়ে, গঙ্গা শুকু শুকু, আকাশে ছাই। কুকুরট পর্যন্ত দাও.ার উপর ছাওয়ায় পড়ে ঘুমোচ্ছে। গাছের পাতাটি নড়ছে না। ঘুমত। ঘুমায় ঘাটের পাতরা, ঘুমতা ঘুমায় গাছের বাকলা ! সেই সময় অন্ধকার-কর ঘরটিতে ছেলে-মেয়ে তিনটিকে ঘুম পাড়িয়ে সোনার মা মেঝের উপর মাদুর বিছিয়ে কাথা সেলাই করছেন। ঠাণ্ড ঘরখানি, জানলার নিচেই আতাগাছের আগডালের ছুটি চারটি সবুজু পাতায় রোদ লেগেছে। দূরে মাঠের মাঝে একটুখানি জল কিক-কিক করছে। কোনখানে একটা ঘুঘু স্বর করে বলতে লাগল, পুকুর ঘুম ঘুম ঘুম –ছপুর ঘুম ঘুম ঘুম । সোনার মা তাই S&&