কুঁকড়ে ডাক দিলেন, কাজ ভুলে না, কাজ ভূলে না। আর অমনি রাজহাস সে আর চুপচাপ বসে রইল না, পাতিহাস, চিনেহাস, সব হাঁসগুলোকে দিঘির পাড়ে জল খাইয়ে আনতে, চলল। কুঁকড়ে হুকুম দিলেন, যত কুঁড়ে হাসের ছানা সবাইকে বেলা পড়বার আগে অন্তত বত্রিশটা করে গুগলি সংগ্রহ করে আন চাই । একটা বাচ্ছা মোরগ, তাকে পাঠালেন কুঁকড়ে বেড়ার উপর দাড়িয়ে চারশো'বার ‘ককুর-কু’ বলে গলা সাধতে, এমন চড়া স্বরে, যেন ওদিকের পাহাড়ে ঠেকে তার গলার আওয়াজ এদিকের বনে এসে পরিষ্কার পৌছয় । বাচ্চ মোরগ গলা সাধতে একটু ইতস্তত করছে দেখে কুঁকড়ে তাকে আস্তে এক ঠোকর দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন যে তার বয়েসে র্তাকেও প্রতিদিন ঠিক এমনি করেই গলা সাধতে আর পড়া মুখস্থ কণ্ঠস্থ সাব করতে হয়েছে। বাচ্চ মোরগের মা গুলজারি ছেলের হয়ে কুঁকড়োর সঙ্গে একটু কোদল করবার চেষ্টা করতেই “যাও, জালার মধ্যে ডিমগুলোতে তা দাও সারারাত ”—গুলজারির উপর এই হুকুম-জারি করে আর-সব মুরগিদের সবজি বাগানে যে-সব পোকা শাক-পাত কেটে নষ্ট করছে, তার সব কটিকে বেছে সাফ করতে পাঠিয়ে দিয়ে কুঁকড়ো পেটরার মধ্যে র্তার মায়ের কাছে উপস্থিত। কুঁকড়োর মা তাকে ধমকে বলে উঠল, “এইটুকু বয়েসে তোর এই বিদ্যে হচ্ছে। কেবল টোটাে করে ঘুরে বেড়ানো।’ কুঁকড়ো একটু হেসে বললেন, মা আমি যে এখন মস্ত এক কুঁকড়ো হয়ে উঠেছি। যাঃ, যাঃ, বকিস নে। 'বেঙাচি বলাতে চান তিনি কোলা ব্যাং, ওরে বাপু সময়েতে সব হয়, চিল হন চ্যাং । আজ না হবে কাল ' বলেই কুঁকড়োর মা পেটরার ডালাটা বন্ধ করলেন। সাদি, কালি, সুরকি, খাকি কুঁকড়োর মার চার বউ। কুঁকড়ে আসতেই তারা বলে উঠল, ঘরে কুঁড়োটি নেই যে, তার কী করছ।” চরে খাওগে বলেই কুঁকড়ে গা-ঝাড় দিয়ে বসলেন। একদল বসে-বসে খাবে আর পরচর্চা করবে, আর অভ্যদল তাদের খোরাক SS
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।