চমৎকার সাজেই সেজে এসেছে। আজকের মতো দিনের শেষ । কাজ সাৰি-আলপনা দেওয়া হল, আজ করবার স্ট্র, তা সারা হয়েছে, কালকের চিন্তা কাল হবে, এখন আর কী, ছমুঠে যা জোটে, খেয়ে নিতে ছু-টি-ই-ই ’ বলেই কুঁকড়ে একটিবার ডাক দিয়ে চালাঘরের মটকা থেকে নেমে বাসার দিকে দৌড়ে যাবেন, ওদিক থেকে শব্দ এল, রিও-ও-ও ! উঠানের মধ্যে শুকনে ঘাসের বোঝাটা একবার . খসখস করে উঠল, আর তার তলা থেকে জিন্ম কুত্তানী খড় আর কুটোয় বাকড়া মাথাটা বের করে জুলজুল করে কুঁকড়োর দিকে চাইতে লাগল। কুঁকড়ো আর কুকুরের চেহারায় মিল না হলেও নামে নামে যেমন কতকটা, কাজেও তেমনি অনেকটা মিল ছিল। তুষ্টের দমন, শিষ্টের পালন দুজনেরই জীবনের ব্রত। কাজেই দুজনে যে ভাব খুবই হবে, তার আশ্চর্ষ কী। তা ছাড়া সূর্য আর মাটি দুয়েরই পরশ দুজনেরই ভালো লাগে। এই আকাশের আলো আর পৃথিবীর উপর ভালোবাসা এই ফুটি জীবকে যেন একসূত্রে বেঁধেছে। সূর্যের দিকে মুখ করে মাটির কোলে দুই পা রেখে না দাড়ালে কুঁকড়োর গান মোটেই খোলে না ; আর কুকুর তার আনন্দই হয় না, রোদে মাটির উপরে এক-একবার না গড়িয়ে নিলে। জিম্মা প্রায়ই বলে, ‘সূর্যকে ভালোবাসে বলেই না সে চাদ দেখলেই তাড়া করে যম, আর মাটিকে ভালোবাসে বলেই না সে গর্ত খুড়ে তার মধ্যে মুখ দিয়ে চুপটি করে থাকে। ভালোবাসার বশে জিন্ম বাড়ির বাগানটায় এত গর্ত করে রাখত যে এক-একদিন বুড়ো ভাগবৎ মালি কর্তার কাছে কুকুরের নামে নালিশ জুড়ত। কিন্তু জিন্মার সব দোষ মাপ ছিল, গোলাবাড়ির সব জানোয়ারের খবরদারি, ক্ষেতে না গোরুবাছুর ঢৌক তার দিকে নজর রাখা, এমনি সব পাহারার কাজে জিন্মার মতো, আর তো ছটি ছিল না। তা ছাড়া জিন্মার জিন্মায় অমন যে কুঁকড়ো এমন-কি তার অত্যাশ্চর্য মুরটি পর্যন্ত রাত্রে না রাখলে চলে না ; কাজেই কুকুর হঠাৎ যখন বললে, ‘রও তখন যে একটা বিপদের S&
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।