পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

'. জিন্ম ভারি বিরক্ত হয়ে বলে উঠল, শোনো একবার, কথার উওরাটা শোনো। বাইরের বনে সোনার আলো, ফুলের মধু থাকতে যে পাখিটা-দরজা-ভাঙা খাচায় বসে বাসি ছাতু খেয়ে পেট ভরাচ্ছে, তার কাছে পরিষ্কার জবাব আশা করাই ভুল ? চড়াই বলে উঠল, ‘সাধ করে কি আমি খাচায় বাসা বেঁধেছি। বাইরে সোনার আলো আর সোমালি মধু সময়ে সময়ে যে সাঁসের গরম-গরম ছররা গুলি হয়ে দেখা দেয় দিদি ’ জিম্ম ভারি চটেছিল। উত্তর করলে, “আরো মুখখু, কোনদিন কবে একটা-আধুটা কাতুজের খোলা ঢেলার মতো খুরে লাগল বলে বনের হরিণ সে কি কোনোদিন বনের থেকে তফাত থাকতে চায়, না আকাশে বাজ আছে বলে কেউ আকাশের আলোটা আর আকাশে ওড়াটা অপছন্দ করে। ভাঙা খাচার পুষ্ঠ্যিপুত্তর হরবোলা । ফুলে-ফলে আলোতে-ছায়ায় অতি চমৎকার বনে-উপবনে যে মুক্তি, তুই তার কী বুঝবি।’ চড়াই উত্তর দিলে, “বেঁচে থাক্ আমার ভাঙা খাচার দাড়খানি । কাজ নেই আমার মুক্তিতে। রাজার হালে আছি, পরিষ্কার কলের জল খাচ্ছি, মস্ত সাবানদানিতে তুবেল গরমের দিনে নাইতে পাচ্ছি, দোলনা চৌকি, চানের টব, বনে এ-সব পাই কোথা, বলে তো দিদি ' জিম্মা এমন রেগেছিল যে, গলার শিকলিট খোলা পেলে সে আজ চড়াইটার গায়ের একটি পালকও রাখত না, মেরেই ফেলত । এই ব্যাপার হচ্ছে, এমন সময় বাড়ির মধ্যে ঘড়ি বাজল, “পি-উ । যেমন পিউ বল, অমনি খাকি মুরগি ঝুড়ির আড়াল থেকে বেরিয়ে সেদিকে দৌড়। গর্তের মধ্যে মুখ দিয়ে সে কিন্তু কিছুই দেখতে পেলে না ; এবারও তার আশা পুরল না, সময় উতরে গেছে, পিউ-পাখি,পালিয়েছে। চড়াই থাকিকে বললে, কী দেখছ গো । এক-পহরের ঘড়ি পড়ল নাকি ? Sbro