পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নেই। বিশ্বকর্ম বললেন –সবাই পাহাড়ে চড়ে ঘুরে বেড়ালে আমার জমিতে হাল দেয় কে, রাজত্বই বা করে কে, ঘর-বাড়িই বা বেঁধে থাকে কে ? - ‘তা আমি কী জানি’ –বলে বিশ্বামিত্র হিমালয়ের ডান দিতে যান, এমন সময়ে বিশ্বকর্ম তার হাত চেপে ধরে বললেন –আগে হিমালয়ের বাচ্ছ। এই ছোটে-খাটো মন্দর পর্বতটাকে ডান দিয়ে দেখে, কী কাণ্ড হয়, পরে বড়োটাকে নিয়ে পরীক্ষণ কোরো ? বিশ্বামিত্র মন্দর পর্বতে ডানা দিয়ে যেমন ছেড়ে দেওয়া, সে অমনি উড়তে-উড়তে বাঙলাদেশের দক্ষিণ ধারে যে-সব দেশ গড়া হয়েছিল সেইখানে উড়ে বসল। যেমন বস আমনি সারাদেশ রসাতলে তলিয়ে গেল ; মাটি যেখানে ছিল সেখানে একটা উপসাগর হয়ে গেছে দেখা গেল। মানুষ যারা ছিল তাদের চিহ্ন রইল না, কেবল মাছগুলো জলে কিল বিল করতে লাগল, আর মন্দর পর্বতটা সমুদ্র তোলপাড় করে এমনি সাতার কাটতে আরম্ভ করলে যে, জল-প্লাবনে বিশ্বকৰ্মার ছিষ্টি মাটি ধুয়ে যাবার যোগাড় । 酸 বিশ্বকর্ম তাড়াতাড়ি সমুদ্রের ধারে-ধারে বালির বাধ দিয়ে জল ঠেকিয়ে কপালের ঘাম মুছে বললেন— ‘আমার হাতের কাজে তোমায় আর হাত দিতে দিচ্ছিনে। এই পৃথিবীর উত্তর শিয়র আর দক্ষিণ শিয়রে কিছু নেই, কিছু সৃষ্টি করতে হয় .সই দু'জায়গায় করোগে । যে ভুলগুলো করেছ সেগুলো আমাকে শুধরে দিতে দাও এখনি । বিশ্বামিত্রের হাত থেকে বিশ্বকর্ম গড়বার যন্তর-তস্তর কেড়ে নিয়ে পাহাড়ে যত জল জমা হয়েছিল, সমস্ত নালা কেটে ঝরনা দিয়ে সমুদ্রের দিকে বইয়ে দিলেন। বিশ্বকৰ্মার ছিষ্টিতে কিছু বাজে থাকবার যে নেই, নষ্টও হবার যো নেই—পাহাড়ের জল সমুদ্রে পড়ে, সেখান থেকে সূর্যের তাপে মেঘ হয়ে আকাশ দিয়ে দেশ-বিদেশে বিষ্টি দিয়ে খেতে-খেতে ফসল গজাতে চলল। বিশ্বকর্ম ইন্দ্রকে বললেন— বাজ দিয়ে মন্দর পর্বতের ডান। কেটে দাও ’ ডানা কাটা গেল, মন্দর সমুদ্রেই ডুবে রইল আর ২৬৩