চড়াই বলে উঠল, জিম্মী-দি ঠিক বলেছে, নতুন মুরগি যেমন দেখা, অমনি কুঁকড়ো-মশায় এমনি করে ঘাড় বেঁকিয়ে বেঁকিয়ে কুক কুক’ বলে নৃত্য করতে থাকেন, মুরগিটির চারি দিকে ’ বলে চড়াইট একবার কুঁকড়োর চলনবলন হুবহু দেখিয়ে দিলে। কুঁকড়ো হেসে বললেন, "আচ্ছা বেকুয় পাখি যাহোক।’ চড়াইট তখনো ডান কঁাপিয়ে লেজ তুলিয়ে কুঁকড়োর মতো তালে তালে পা ফেলে মোরগ মুরগির নকল দেখাচ্ছে, ঠিক সেই সময় ওদিকে তুম করে বন্দুকের আওয়াজ হল । চড়াই অমনি কাঠের পুতুলের মতো এক পা তুলেই দাড়িয়ে গেল। কুঁকড়ে গল উচু ক’রে, আর কুকুর কান খাড়া করে নাক ফুলিয়ে শুনতে লাগল। আর-এক গুলির আওয়াজ। চড়াইট গিয়ে মুরগি গিল্লির ভাঙা পেটরার আড়ালে লুকিয়েছে, এমন সময় উহু-উ-উ-উ বলতে বলতে সোনার টোপর সোনালিয়া বন-মুরগি কুঞ্জলতার বেড়ার ওপার থেকে ঝপাং করে উড়ে এসে উঠোনের মধ্যে পড়ল। কুঁকড়ে বলে উঠলেন, ‘একী । এ কে ! কে এ। সোনালিয়া কুঁকড়োর কাছে ছুটে গিয়ে বললে, পাহাড়তলির ‘সা মোরগ, আপনি আমায় রক্ষে করুন। আবার জুম করে আওয়াজ। সোনালিয়া চমকে উঠেই অজ্ঞান হয়ে ঢলে পড়লেন, পালাবার আর শক্তিই ছিল না। কুঁকড়ে অমনি একখানি ডানা বাড়িয়ে সোনালিয়াকে তুলে ধরে আর-এক ডানার ঝাপটা দিয়ে গামলা থেকে জলের ছিটে আর বাতাস দিতে থাকলেন খুব আস্তে আস্তে । র্তার ভয় হচ্ছিল পাছে পাতার সবুজ, ফুলের গোলাপি, সোনার জল আর সন্ধ্যাবেলার আলো দিয়ে গড়া বাসস্তী শাড়িপরা এই আশ্চর্য পাখিটি জল পেয়ে গলে যায়, কি বাতাসে মিলিয়ে যায়। একটু চেতন পেয়ে সোনালিয়া আবার কুঁকড়োকে মিনতি করতে, লাগল, ওগো একটু আমায় লুকোবার স্থান দাও, আমাকে পেলে তারা মেরেই ফেলবে।’ 劾 - চড়াই সোনালিয়ার গায়ে টকটকে লাল সাটিনের কাচুলি দেখে
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।