পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উপরে উড়ে পড়ল। কুমিরটা আর একবার জল থেকে নাট-চোখ পাকিয়ে নাকটা তুলে এদিক-ওদিক করে ভুল করে ডুব মারলে। হাসের দল উড়তে-উড়তে খানিক গিয়ে আবার জলে পড়ল, কিন্তু সেখানেও আবার কুমির, আবার ওড়া, আবার গিয়ে জলে পড়া —এই ভাবে সারাদিন কাটল । কত ছোটো পাখি যে, এই ঝড়ে মারা পড়ল, পথ হারিয়ে একদিকে যেতে আর একদিকে গিয়ে পড়ল, না খেয়ে জলে ভিজে নদীতে পড়ে পাহাড়ে আছাড় খেয়ে কত যে পাখি মরে ঝরে গেল তার ঠিকঠিকানা নেই। চকার দল হাফিয়ে পড়েছে, এদিকে অজানা নদী, ওদিকে অচেনা ডাঙা ৷ পাহাড় থেকে জল বরফের মতো ঠাও হয়ে গড়িয়ে চলেছে —ঝড়ে ভাঙা বড়ো-বড়ো গাছের ডাল ভেসে চলেছে, চকা দলবল নিয়ে একবার গাছের ডালে ভর দিয়ে জিরোবার চেষ্টা করলে কিন্তু ভিজে ডাল একেই পিছল তার উপরে আবার স্রোতে গড়িয়েগড়িয়ে চলেছে । বাতাস ক্রমাগত তাদের জলে ঠেলে ফেলতে লাগল, ওদিকে সন্ধ্যার আঁধার ঘনিয়ে এল, জলে থাকা আর চলে না, হাসের উড়ে পড়ল। আকাশে চাদ নেই, তারা নেই, কেবল কালো মেঘ আর বিদ্যুৎ, আর হুহু বাতাস, থেকে-থেকে পাখিরা ভয়ে চিৎকার করে উঠছে, জলের ধারে ঝুপঝাপ পাড় ভেঙে নদীতে পড়ছে, বজ্রঘাতে বড়ো-বড়ো গাছ মড়মড় করে মুচড়ে পড়ছে, এরি মাঝ দিয়ে চকা তার দল নিয়ে ডাঙায় আশ্রয় নিতে চলেছে। হঠাৎ এক সময় সামনে একটা গুনগুন আওয়াজ শোনা গেল, তারপরেই রিদয় দেখল হাওয়ার মতো একটা পাহাড়ের দেওয়াল নদী থেকে আকাশে উঠেছে আর তারি তলায় নদীর জল তুফান তুলে ঝপাঝপ পড়ছে । চকা সোজা পাহাড়ের দিকে চলেছে। রিদয় ভাবলে –এইবার শেষ, আর রক্ষে নেই, সে বিষ্টিতে কুয়াশায় ঝাপসা পাহাড়ের দিকে চেয়ে রয়েছে এমন সময় চকা ডাক দিলে -"বায়ে ঘেসে ।’ দেখতে ՀեԵ