পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আসামী বুরুঞ্জি উত্তর থেকে বড়ো নদী যেখানে ব্রহ্মপুত্রের জলে এসে মিলেছে ঠিক সেই বাকের মুখেই কতকালের পুরোনো ডিমরুয়ার আসামী রাজা আড়িমাওয়ের নাটবাড়ি। নাটবাড়ির নিচেই নদী মজে গিয়ে মস্ত চর পড়েছে। এত কাল থেকে হাড়গিলে পাখিরা এই চর দখল করে আছে যে, ক্রমে চরটার নামই হয়ে গেছে হাড়গিলার চর। এই চরের ওপারেই দেওয়ানগিরি মস্ত একটা বুড়ো আঙুলের মতো আকাশের দিকে ঠেলে উঠেচে । এই দেওয়ানগিরি হল যত ফরিয়াদি পাখির আডড । একপারে রইল আসামী মাছেদের রাজা আড়িমাওয়ের মাটবাড়ি আর এক পারে দেওয়ানী ফরিয়াদির আডড দেওয়ানগিরি, মাঝখানে বসে রয়েছেন হাড়গিলে । আসামী ফরিয়াদিতে লড়াই মোকদ্দমা প্রায়ই হয়, তাতে দুই দলই মাঝে মাঝে মারা পড়ে। * হাড়গিলের খাম্বাজং রাজা দুই দলের মধ্যে আরামে বসে দুই দলেরই হাড়-মাস খেয়ে মুখে আছেন, এমন সময় চর মুখে খবর পৌছল বুড়ো-আংলা আসছেন। হাড়গিলের রাজা খাম্বার: লম্বালম্বা পা ফেলে জলের ধারে তার কাশবাগিচায় বেড়িয়ে বেড়াচ্ছেন ! ‘চুপিম-পা’ আর ‘চোরম-পা দুই সেনাপতি পায়ে-পায়ে হাড়গিলে রাজের কাছে হুকুম নিতে এলেন –রিদয়-হংপালকে এ-পথে আসতে দেওয়া হবে কিনা ৷ খাম্বাজং হাড়গিলে অনেকক্ষণ আকাশের দিকে ঠোট উচিয়ে ভেবে বললেন –‘আসতে দিতে পার। হঠাৎ দেশের মধ্যে মানুষ আসতে দিতে হাড়গিলে-চরের প্রজার রাজি ছিল না। দুই সেনাপতি একটু ইতস্তত করছে দেখে খাম্বাজং সভাপণ্ডিত চুহুংমুংকে ডেকে বললেন –দেখ তো বুরুঞ্জি পুথিতে কলির কত হাজার বছরে এখানে মানুষের আগমন লিখছে ? ২৯৭