মান্ডে এসে কুঁকড়ে খেলেন স্বর্ষের আলোর মতে কোন পুৰআকাশের সোনার পুরু থেকে তুমি এলে সোনালিয়া বনমুরগি । মোনালি মাখমের মতো নরম স্বরে বললে, আমি ওই বনে আছি বটে কিন্তু ওটা তো আমার দেশ নয়। কুঁকড়ে তার সবচেয়ে মিষ্টি সুরে শুধোলেন, তবে কোথায় তোমার দেশ সোনালিয়া বিদেশিনী।’ মোনালি উত্তর করলে, ‘তা তো মনে নেই। শুনেছি বরফের পাহাড়ের ওপারে যে-দেশ, সেখানকার মাটি ফুল-কাটা গালচেতে একেবারে ঢাকা, সেইখানের কোন অশোক বনের রানীর মেয়ে আমি। আমার একটু একটু স্বপ্নের মতো মনে পড়ে—চমৎকার নীল আকাশের তলায় বড়ো বড়ো গাছের ছাওয়ায় সখীদের সঙ্গে খেলে বেড়াচ্ছি অশোক বনের তুলালী। আমাদের ঘরের চারি দিকে কত রঙের ফুল ফুটেছে, ভোমরা সব উড়ে উড়ে পদ্মের মধু খেয়ে যাচ্ছে। কেবল পাখি আর প্রজাপতি আর ফুল। একটাও শিকারী ডালকুত্তো নেই। মানুষরা পর্যন্ত সেখানে আমাদের মতো চমৎকার সব রঙিন সাজে সেজে রাজা-রানীর মতো বেড়িয়ে বেড়াচ্ছে, নন্দন-কাননে আনন্দে ঘুরে বেড়াতেই আমি জন্মছি, ডালকুত্তোর তাড়া খেয়ে ছুটোছুটি করে মরতে তো নয় । আহা, সেখানকার সূর্যের লাল আভা রক্ত-চন্নন আর কুসুম-ফুলের রঙে মিশিয়ে বুকে মেখে রেখেছি, এই দেখো ’ বলে সোনালিয়া কুঁকড়োর গা-ঘেষে দাড়াল। কুঁকড়ে আনন্দে ডগমগ হয়ে ঘাড় ফুলিয়ে ডানা কঁাপিয়ে তালে-তালে ‘পা ফেলে সোনালিয়ার চারি দিকে খানিক নৃত্য করে আস্তে-আস্তে এগিয়ে এসে বললেন, ‘মনে৷ মোনালিয়া। শোনো সোনালিয়া বিদেশিনী বনের টিয়া— হঠাৎ মোনালি বলে উঠল, “ইস্ । কুঁকড়ে একটু থতমত খেয়ে গেলেন। বুঝলেন সোনালিয়া সহজে ভোলবার প্রাত্রী নয়। যে-কুঁকড়ে তাদের দিকে একটিবার ঘাড় হেলালে সাদি কালি গোলাপি গুলজারি সব মুরগিই আকাশের দ্বাদ হাতে পায় মনে এমনি করে, সেই জগৎবিখ্যাত কুঁকড়োকে 을8
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।