পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তারপর ‘ছি-ছি বলে ষেন কেবলি ডানা ঝাড়া দিতে শুরু করে দিলে । চুয়োর দল ছোটে-বডে মুড়ির ঝরনার মতে গড়াতে-গড়াতে পাথরের পাচিলের গোড়া বেয়ে নাটবাড়ির সিংগি দরজার দিকে চলে গেল, ঠিক সেই সময় আকাশে দুই পা লটপট করতে করতে হাড়গিলে রাজ খাম্বাজং ঝুপ করে হাসদের মধ্যে এসে পড়লেন। রিদয় এমনতরো পাখি কোনোদিন দেখেনি, এর মাথা, গলা আর পিঠ শাদ রাজহাসের মতে, ডানা দুখানা কালে দাড়কাকের মতে, তেলে পাকানো গেটে-বাশের ছড়ির মতো লাল চুখান সরু ঠ্যাং, আর বারে হাত কাকুড়ের তেরো হাত বীচির মতো এতটুকু মাথায় এত বড়ো এক লম্বা ঠোট —এক আঙুল কলমের যেন দশ আঙুল নিব, তার ভারে মাথাটা ঝুকেই আছে, মুখের দুপাশে বোয়াল মাছের মতো ফুটে চোখ বসানো | রিদয়ের বোধ হল, পাখি মাছ কাকুড় কলম বঁাশ সব মিলিয়ে যেন এই পক্ষীরাজ স্থষ্টি হয়েছে ! হাড়গিলেকে দেখে চকা তাড়াতাড়ি ডানার পালক ঝেড়েবুড়ে সামনে এগিয়ে এসে দণ্ডবৎ হয়ে দু-তিন বার প্রণাম করে দাড়িয়ে ভাবতে লাগল হঠাৎ খাম্বাজং কী কাজে এলেন । নাটবাড়ির চুড়োয় হাড়গিলের বাসা চর্ক জানে আর ফাল্গুন মাসের গোড়াতেই হাড়গিলেদের আনবার পূর্বে খাম্বাজং বাসাটা একবার তদারক করতে প্রতি বছরে এখানে এসে থাকেন সেটাও জানা কথা । কিন্তু হাড়গিলের তো হাসদের সঙ্গে প্রায়ই আলাপ সালাপ রাখে না, হঠাৎ আজ হাসের দলে রাজার আগমন হল কেন, এটা চক ভেবে না পেয়ে একবার ঘাড় চুলকে বললে –‘জং বাহাঙ্গুরের বাসার খবর ভালো তো, গেল ঝড় বৃষ্টিতে কোনো লোকসান হয়নি তো ? হাড়গিলেরা সবাই তোতলা, সহজে কথা কওয়া তাদের মুশকিল, খাম্বাজং অনেকক্ষণ ঠোট কঁাপিয়ে এ-চোখ বুজে ও-চোখ খুলে ভাঙা গলায় কান্থনি শুরু করলেন বুড়োবয়সে বাসাটা ঝড়ে পড়ে গেছে, একে উচু নাটবাড়ি, তায় আবার চুড়ে, গিল্পী দেখে-দেখে সেখানেই \రిe