পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গেলে শাস্ত্রের কথা মিথ্যা হয়ে যায়। এই নাও শনিবার অমাবস্তাতে তোলা এই মানকচুর শিকড় সঙ্গে রাখ, ভূত পালাবে। বলে রিদয়ের হাতে হাড়গিলে তার বাসার ছেড়া মাছর একটু ভেঙে দিয়ে তার কানে মন্তর দিলেন । * রিদয় বাকড়া চুলের মধ্যে কচুর শিকড় গুজে চিলে ছাতের গোল সিড়ি বেয়ে পেচার সঙ্গে নেমে চলল, মনে-মনে ভূতের মন্তর আওড়াতে-আওড়াতে –হং সংবং লং হাঃ ফুঃ ভূতচতুর্দশীর রাত্রি এমন অন্ধকার যে, ভূতকে পর্যন্ত দেখা যায় না। রিদয় সেই অন্ধকারে , পেচার সঙ্গে চিলের ছাতের ঘোরানো সিড়ি দিয়ে ক্রমাগত নেমে চলেছে। তুদিকে পিছল পাথরের দেওয়াল, তার মাঝে-মাঝে এক-একটা ঘুলঘুলি, সেইখান দিয়ে একটু যা আলো আর বাতাস আসতে পায! রিদয় দেওয়ালের গা ঘেসে টিকটিকির মতো পায়ে-পায়ে নামছে, অন্ধকারে পেচা যে কোনদিকে চলেছে সেই জানে, কেবল সে এক-একবার হাকছে —‘উচ-নিচা? আর সেই ডাক শুনে রিদয় চলেছে, ইস্কুপের প্যাচের মতো পাক-দেওয়া সিড়ি পার হয়ে অন্ধকারে! একটা কিসের গায়ে হাত পড়তেই সেটা কঁ্যে বলে ঝটপট করে উঠল, এক জায়গায় জল পড়ে ডোবা মতো হয়েছে হঠাৎ ঠাণ্ড জলে পা রেখেই রিদয় থমকে দাড়াল, পেচা অমনি বলে উঠল –‘বায়ে ঘেষে। কখনো বায়ে কখনো ডাইনে কখনো উচাৰ কখনো নিচায় এইভাবে রিদয় চলেছে ! চোখে কিছু দেখছে না, কানে শুনছে খালি যেন এখানে কী একটা ঝটপট করে উঠল, ওখানে মাথার উপর থেকে কী ঠিক-ঠিক করে ডাক দিলে, কখনো শুনলে পাথরের গায়ে কে নখ আঁচড়াচ্ছে, ওদিকে কারা যেন ছুদাড় করে পালিয়ে গেল, পায়ের কাছে কী একটা পাশমোড়া দিলে, হঠাৎ গালে যেন কে একটা চিমটি কেটে গেল, কানের কাছে চট করে একটা কে টু দিয়ে পালাল ! এর উপরে রিদয় নানা বিভীষিকা দেখছে – হঠাৎ এক জায়গায় গোটাকতক চোখ আলেয়ার মতো জলেই ©›ግ