পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শুকনে। ঘাস পাতা বিছানো তাদের তুদিনের বাসাটি খালি হা-হ করছে, কেউ কোথাও নেই। রিদয় চুপ করে রইল, ভাঙা গলায় খোড়া হাস আবার ডাক দিলে –‘বালি, কোথায় বালি !’ রিদয় ভাবছে নিশ্চয় শেয়াল এসে মরা হাসটা টেনে নিয়ে গেছে, ঠিক সেই সময় জলার ধারে বেনা-বনের সবুজ পাতাগুলো নড়ে উঠল, তার পরেই মিঠে স্বরে — এই যে আমি, একটু গা ধুয়ে নিচ্ছি’ বলে বালি আস্তে-আস্তে জল থেকে উঠে এল । তার ঝকঝকে পালকে শিশিরের মতো জলের ফোটাগুলি আলো পেয়ে হীরের মতো ঝকঝক করছে, রিদয়ের মনে হল যেন জলদেবী জল থেকে উঠে এলেন । খোড়া হেলতে-তুলতে বালির কাছে গিয়ে আস্তে-আস্তে তার গলা চুলকে দিয়ে বললে –‘বেদনা আছে কি ?’ বালি ঘাড় নেড়ে বললে –‘একটুও না, তোমার বন্ধুর কৃপায় আর তোমার যত্নে আমি ভালো হয়ে গেছি।’ তাবপর কুজনে জলে গিয়ে সাতার আরম্ভ করলে, রিদয় জলের ধারে বসে একটা বেনার শিষ চিবোতে থাকল । বালিহঁাসকে সঙ্গে নিয়ে খোড়া এর মধ্যে একদিন চুপিচুপি পদ্মবনে পদ্ম-ফুলের সোনালি রেণু এ ওব গায়ে ছাড়িয়ে দিয়ে নিজেরাই নিজেদের গায়ে হলুদ মেখে, মাছরাঙা পাখিদের বৌ-ভাতে মাছ খাইয়ে, বিয়ে-থাওয়া খাওয়া-দাওয়া চুকিয়ে জলার ধারে বাস। বাধবার যোগাড়ে আছে, দেশে ফেরার কিংবা বিদেশে উড়ে চলার আর নামটি করে না। রিদয় শুধোলে বলে –‘আমরা দুটিতে যেখানে থাকি সেইখানেই আমাদের দেশ । রিদয় বলে –‘আমার তো দেশ আছে, আমাকে তো সেখানে যেতে হবে বিয়ে-খাওয়াও করতে হবে। এই জলার মধ্যে না পাওয়া যায় ভালো খাবার, না আছে ভালো শোবার জায়গা, এখানে বাসা বাধলে তো আমার চলবে না ? বালিহঁাস বললে –‘তা বেশ তো, এই জলার ওপারেই একটা S)○8