একলা সোনালিয় উঠোনে দাড়িয়ে বললে, আর কুঁকড়োকে আমি এখন খুব ভালোবাসি, কেননা –কেননা –সবাই তার শত্রু ’ খেতু আর আবাদ যেখানে শেষ হয়েছে, সেইখানে পাহাড়ের একটা ঢল, সেইখানে পেচাদের ঘোটের মজলিশ বসবে অতি নোংরা ঢালু জমি ; শেয়ালকাটা, বাবলার্কাটায় ভর উপরে মন্ত পাকুড় গাছটা, সরু একটা পাগদণ্ডি বেয়ে সেখানে উঠতে হয়। রাত্রে জায়গাটাতে এলে ভয় করে কিন্তু দিনের বেলায় যখন সূর্য ওঠে, এখান থেকে ছায়ায় বসে পাহাড়ে ঘেরা গ্রাম, নদী সবই অতি চমৎকার দেখায় । পাকুড় গাছে, লতা-পাতায় ঝোপে-ঝাড়ে জায়গাষ্ট এমনি ঢাকা যে একবিন্দুও চাদের আলো সেখানে পড়তে পায় না। সেই ঘুটফুটে অন্ধকারে হুতুম পেচার চোখ টপটপ করে জলছে, আর কিছু দেখা ও যাচ্ছে না, শোনাও যাচ্ছে না, অথচ অনেক পাখিই আজ সেখানে জুটেছে ঘোট করতে। পেচার সর্দার হুতুম একে একে নাম ধরে ডাকতে লাগলেন, আর চার দিকে একটার পর একটা লাল, নীল, হলদে, সবুজ চোখ জালিয়ে দেখা দিতে থাকল একে একে ধুধুল পেচ, কাল পেচ, কুটুরে পেচ, গুড়গুড়ে পেঁচা, দেউলে পেচ, দালানে পেচ, গেছে। পেচ, জংলী পেচ, পাহাড়ী পেচা। হুতুমধুমে ডেকে চলেছে, ভূতে পেচ, খাদ পেচ, চিলে পেচ, গো-পেচ, গোয়ালে পেচ, লক্ষ্মী পেচ, লক্ষ্মী পেচার দেখা নেই, চোখও জলছে না। হুতুম ঘাড় ফুলিয়ে রেগে ডাক দিলে, 'ল-ক-খী-পে-এf-এT-চ-আ-আ লক্ষ্মী পেচা তাড়াতাড়ি এসে চোখ খুলে হাপাতে হাপাতে বললে, ‘অনেক দূর থেকে আসতে হয়েছে, বিলম্ব হয়ে গেল।’ চিলে পেচা চেচিয়ে বললে, “সেইজন্তেই ত্বর করা তার উচিত ছিল।’ সব পেগ একত্র হয়েছে তখনৃ হুকুম গম্ভীরভাবে বললেন, ‘কাজ আরম্ভ হবার আগে এসে ভাই সব এককাটা হয়ে এক মুরে নিজের নিজের ঢাকের বান্তি বাজিয়ে দিই, হতুম-ধুম, হুচ্ম-হম। VG
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।