পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাতরার বৌ দেখেও দেখলে না ; তেলে হলুদে নালার জলে খানিক সোনালি রং গুলে দিয়ে হাত পা ধুয়ে বাড়ি এসে রাখতে বসল । শিবাই আর সেদিন বাড়ি আসে না। বিমলার মন্দিরে হত্য দিয়ে পড়েছে। কিন্তু খিদে তার জন্তে বসে রইল না। সাতরার বেী অনেকক্ষণ বসে বসে উনুনের কয়লা নিয়ে হেঁসেল ঘরের দেওয়ালে খানিক নানা আঁচড়-পোছড় দিয়ে একটা অদ্ভূত জানোয়ার অঁাকলে । তারপর ভাত বেড়ে নিজে খেতে বসবে এমন সময় শিবাই এসে সেই পাতেই বসে গেল, কোনো রকম দ্বিধা না করে। কিন্তু হাতের গ্রাস তাকে আর মুখে তুলতে হল না, সামনের দেওয়ালে কয়লার লেখা প্রকাণ্ড শাদুলি-মূর্তিটা চোখে পড়তেই শিবাই হয়েছে হয়েছে'—বলে দুই হাত তুলে নাচ আরম্ভ করলে । 愈 বেী তার অবাক হয়ে শুধোলে, ‘ক্ষেপলে নাকি ? শিবাই তার দিকে কটমট করে চেয়ে বললে, ‘বাজে বকিসনে, চট করে হাতুড়ি আর বাটালি আর ছেনি আর খস্তা নিয়ে আয়, এখনি কাজে লাগব, —আর দ্বাখ বেশ শক্ত দেখে একখানা পাথরও আনবি, বুঝলি ? বুঝেছি?—বলেই সাতরা-বৌ সা করে বেরিয়ে বাইরে থেকে দরজায় শিকলটি টেনে পাড়ায় খবর দিতে ছুটল,—শিবাই ক্ষেপেছে । বদ্যি ডাকতে, পাড়ার লোক জাগাতে প্রায় ভোর হল । সকালে সকলে দরজা খুলে দেখলে, শিবাই থালার সমস্ত ভাত খেয়ে, ঘর নিকোবার মাটি দিয়ে মস্ত এক শাদুলের নমুনা গড়ে দেওয়ালের কয়লার আঁচড়টা জল দিয়ে মুছে ফেলতে চেষ্টা করছে –তার ভয়, পাছে কেউ বলে সে তার স্ত্রীর দেখে নকল করেছে। ‘সেই থেকে বিমলা দেবী রাজার উপর তুষ্ট হলেন ; আর রাজা খুশি হলেন শিল্পীর উপর। কিন্তু শিবাই তার বৌটার উপর খুশি হল কি না জানা যায় না, ইতিহাসেও তার প্রমাণ নেই। 8