সেটুকুও দেখে শোনে, গোলাবাড়ির সব খবরই সে রাখে চোখ বুজে , বুজেই। চড়াই বললে, হাজির যেন হলেন কুঁকড়ে, তার পর ? তার পর আর কী। কুঁকড়ে যখন দেখবেন পাড়ার সবাই অদ্ভুত সব মোরগদের খাতির করতেই ব্যস্ত, এমন-কি, হয়তে সোনালি পর্যস্ত, জেনে রেখে তখন খুটিনাটি বাধবেই আর তা হলেই—’ কুঁকড়োর লড়াই না হয়ে যায় না।’ বলেই হুতুম ঠোঁটে ঠোট বাজিয়ে দিলেন। কিন্তু বেড়াল বললে, ধরে লড়ায়ে কুঁকড়োর হার না হয়ে জিতই হয়ে গেল ফস করে । তখন উপায় ? কুটুরে অমনি বললে, “সে ভাবনা নেই, ওই-সব খাসা মোরগদের মধ্যে যে বাজখাই পালোয়ান মোবগ আছে তাকে পারে এমন কেউ দেখি নে । মানুষ তার পায়ে লোহার কাটা-দেওয়া যে কাতান বেঁধে দিয়েছে তার এক ঘা খেলে কুঁকড়োকে আর দেখতে হবে না, একেবারে চিৎপটাং ’ বলে কুটুরে হাসতে লাগল। সঙ্গে সব পেচাই ধাই ধাই করে নাচতে থাকল। হুতুম বললে, “আমি তো বাপু আগে গিয়ে তার মাথার মোরগ ফুলটা ছিড়ে খাব, কপা কপ কপা কপ । চড়াই মনে মনে বললে, গতিক তো খারাপ দেখছি। কুঁকড়োকে খবর দেব নাকি ? কিন্তু চেচিয়ে সে, সবাইকে বললে, “বেশ হবে, খুব হবে, ভালোই হবে, কী বল । কুটুরে বললে, ‘মজ বলে মজা । খাসা মোরগগুলোও দু-চারটে মরবে নিশ্চয় । পেট ভরে খাও ; সেগুলো কি নষ্ট করা ভালো ' হুতুম চিলের কানে-কানে বললে, কুঁকড়োর কাবারের পর হজনে মিলে, বুঝেছ কিনা, চড়াই ভাতি...’ আর তার পরে ধুধুলে পেচা কী বলতে যাচ্চে এমন সময় দূরে কুঁকুড়ার সাড়া পড়ল, গা-তোলতোল । পেচার শুনলে, পটোল তোল। অমনি ভয়ে সব চুপ। কুটুরে ক্রমেই মাথা হেঁট করতে লাগল। কে যেন তার ঘাড় 8)
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।