পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৫৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈকালে খবরি চলে ইস্টসানের দিকে রিডিংরুমে আবার খবর জানতে পৃথিবীর কোথায় কী হচ্ছে – দেশের খবর দশের খবর, সহযোগী সাহিত্যের অসুহযোগী মানুষদের সঠিক খবর। ছবি চলে, কবি চলে মাঠের পথে সন্ধ্যার হাওয়ায় উডুনী উড়িয়ে। কৰি গায় চাদনী রাতের গান, ছবি চুপ করে শোনে আর চায় মাঠের পারে – বঁাশঝাড়ের ফঁাক দিয়ে যেখানে চাদ উঠছে। সেই সময় বন-গায়ের ধারে মাদল বাজে, ডাক দেয় গায়ে গায়ে কালো ছেলেমেয়েদের ‘বাহ-পড়বে’। কবি বলে, ও কী শুনি । ছবি বলে, ও কী দেখি ! দুজনে এগিয়ে যায় গায়ের দিকে । একদল কালে পুরুষ, একদল কালো মেয়ে সারাদিন মাঠে মাঠে রোদে পিঠ পুড়িয়ে এখন চাদনীতে উৎসব করতে বেরিয়েছে –কেউ সেজেছে ফুলে ফুলে, কেউ সেজেছে পাখির পালকে, খোপায় সরু ধানব বুরি, গলায় কারু পুতির মালা, পরনে নতুন শাড়ি, ধোয়৷ কাপড় । গাছের তলায় ছাওয়া, সেখানে দাড়িয়ে মেয়েরা । মাঠের মাঝে চাদের আলো, সেখানে দাড়িয়ে পুরুষেরা । কবি ছবি দুটিতে দূব থেকে দেখছে। 態 মাদল ডাকে ৷ পরব শুরু ! যেন বাদলের মেঘ ডেকে গেল বকের পাতিকে। মেয়েরা শুনেও যেন শোনে না, গল্পই করে ছাওয়ায় দাড়িয়ে । বল্লমের আগায় চামর দুলিয়ে দূত যায় এগিয়ে, জানায় সংবাদ — খবরের কাগজ তো নেই এদের। মাদল বাঞ্জে থৈয়া থৈয়া, হাতের নোয়া বাজে ঝিনি ঝিনি, মেয়ের এগিয়ে আসে চাদনী জ্বালা আসরে। নাচ শুরু হয় । কবি শোনেন, ছবি দেখেন, দেখে লিখে চলেন— দিনকে দিনে দিনেক দিনে চান্নি রাতের শা, নি ছাওয়া বাড়তে চলে । ● ● >