হজনে চলে যাই, আহ সেই বনে যেখানে বসন্ত বাউরা কেবলি বলছে বউ কথা কও ; আর পাতায় পাতায় সোনার অক্ষরে ভালোৰাসার গান সব লেখা হচ্ছে সকাল থেকে সন্ধে।” এই সময় ওধারটায় কিচিরমিচির শব্দ উঠল, সব পাখির ময়ুরকে পাখম ছড়াবার জন্তে পেড়াপিড়ি করছে। চিড়িয়াখানার “সব মোরগগুলো তাদের সম্পর্কে পাখমদাদা ময়ূরের চারি দিকে ঘিরে দাড়িয়েছে। অনেক বলা-কওয়াতে ময়ুর পাখম খুলে দেখালেন । পাতিহাস ই করে চেয়ে রইল। ময়ূরের কাছে কোটের কাটকুট নমুনো ফ্যাশান চাইতে লেগে মোরগদের মধ্যে হট্টগোল বেধে গেল । সবাই ময়ূরকে আপনার আপনার সাজগোজ দেখিয়ে পাস হতে চাচ্ছে, এক মোরগ অন্তকে ঠেস দিয়ে বলছে, “তোমায় দেখতে হয়েছে ওই কাপড়ে, যেন সুড়ঙ্গে স্থপুরি গাছটি। সে আবার তাকে এক ধাক্কা দিয়ে বলছে, আর তোমারই সাজাটা কী দেখতে হয়েছে ? যেন মগের মুল্লুকের আটচালাখানি, শিং বের-করা ছু চোলো। সবাই যখন সাজসজ্জা দেখাতে মারামারি বাধিয়েছে তখন কুঁকড়ে গলা চড়িয়ে বলে উঠল, “তাকাও, তাকাও, ওদিকে তাকাও ’ কুঁকড়োর কথামতে সব মোরগ মায় ময়ুর হাস আর যত দেমাকে পোশাকী পাখি সবাই সেই কাপড়-ঝোলানো খড়ের কুশে-পুতুলটার দিকে চেয়ে দেখলে, হাওয়াতে সেই খড়ের কাঠামোর কামিজের হাতাটা লটপট করে যেন তাদেরই দেখিয়ে কী বলতে যাচ্ছে। ভয়ে সব পোশাকী পুষি পাখিদের মুখ চুন হয়ে গেল । কুঁকড়ো হেঁকে বললেন, তাকাও, তাকাও, উনি তোমাদের আশীৰ্বাদ করছেন। মোরগগুলো কুঁকড়োর দিকেই চেয়ে রইল, তখন কুঁকড়ে। বললেন, “ওই যে কাঠামোটার পায়ে পেন্টালুন লটপট করছে, ওটা কী বলছে জানো ? আমার এই ছককাটা ছিট একদিন ফ্যাশান ছিল, উনোপঞ্চাশ টাকা গজ দরে আমি বিকিয়েছি, এক কালে। আর ওই যে ভাঙা তোবড়ানে সোলার টুপি ওটার মাথায় চড়ানো দেখছ, ওটাই-বা কী বলছে ? — আমিও একদিন ফ্যাশান ছিলুম, আশি ●
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৭৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।