পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

টাকা দিয়ে লোকে আমায় কিনেছিল, এখন মেথরও আমাকে মাথায় দিতে লজ্জা পায়। আর ওই দেখো কোট, তার এখনো ভুল ভাঙে নি, সে এখনো দেখো, চলতি বাতাসে উড়ে উড়ে আকাশে ফ্যাশান হাতড়ে বেড়াচ্ছে । চলতি বাতাস চলে গেল আর ওই দেখো ফ্যাশান-ধরা নিষ্কর্ম কোটের হাতত্বটে নিরাশ হয়ে ঝুলে পড়ল। এই কথা কুঁকড়ে যেমন বলেছেন আর সত্যি সত্যি বাতাস বন্ধ হল, সব পাখিরা দেখলে দুই হাত মাটির দিকে ঝুলিয়ে কুশে-পুতুলটা স্থির হয়ে দাড়াল। তারা সব সেইদিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে এমন সময় ময়ুর বললে, রাখে, ওটা কি কথা বলতে পারে যে এ-সব বলবে। তুমিও যেমন । কুঁকড়ে ময়ূরকে বললেন, ‘তুমি যা বললে ওটাকে, মানুষেরা ঠিক ওই কথাই তোমাকে বলছে ইস্ত-না-গা-দ।’ ময়ুর তার কাছের এক পাখিকে চুপি চুপি বললে যে, এইসব জাকালো জাদরেল পোষা মোরগকে সোনালির সামনে হাজির করাতেই কুঁকড়োটা তার উপর খাপ্পা হয়েছে। তার পর ময়ুর কুঁকড়োকে বললে, “আচ্ছা, এই যে সব জাদরেল মোরগ এসেছেন, এদের তুমি ঠাউরেছ কী শুনি ? বুক ফুলিয়ে কুঁকড়ে উত্তর দিলেন, দর্জির হাতে সেলাই করা, কলে কাটা, কঁাচি দিয়ে ছাটা নকল ছাড়া এরা আর কিছুই নয়। সবটাই এদের জোড়াতাড়া দেখছি, ওর ডানা তার ঝুঁটি, এমনি সব টুকিটাকি দিয়ে গড়া এদের চেহারাগুলো কঁাসরিপাড়ার সঙের বিজ্ঞাপনে লাগতে পারে ; আর-কোথাও এমন-কি, এই সামান্য গোলাবাড়িতেও, এদের দরকার মোটেই নেই। এদের চলন, বলন, গড়ন সবই বেস্বরে, বেয়াড়, বেখাপ্পা। ডিমের সুন্দর ডেলটি নিয়ে. সব পাখিই বেরিয়ে আসে জগতে, কিন্তু ডিম ফাটিয়ে এরা যে বেরিয়েছে তার কোনো লক্ষণ তো এদের শরীরে দেখছি নে ? কুঁকড়োর কথা শুনে একটা পোশাকী মোরগ রেগে বলে উঠল, ግ»