বনে ফিরে এসে কুঁকড়ে আবার তার গান ফিরে পেয়েছেন। কিন্তু কেবল সকালের গানটি ছাড়া সোনালি তাকে আর-একটি গানও, গাইতে দেবে না —তাও আবার সকালটা যদি সোনালির গায়ের পালকের চেয়েও রঙিন আর জমকালো হয়ে দেখা দেয় তবেই। কুঁকড়ে সোনালিকে বলেন, “এই আলোতেই আমাদের সেদিনের মিলন, সেটা ভুললে চলবে না সোনালি। আলোর জুয় আমাকে দিতেই হবে সারাদিন।' সোনালি বলে, “তুমি আমার চেয়ে আলো-কে কেন ভালোবাসবে ? ইতিমধ্যে একদিন চকচকে সবুজ এক সোনাল-পাখির সঙ্গে সোনালির দেখাশুনো হয়েছে, আর গহন-বনের একটা নির্জন পথে ছুটিতে বেড়িয়ে বেড়াচ্ছে এটা কুঁকড়োর চোখ এড়াল না । কিন্তু মনের দুঃখ মনেই রেখে কুঁকড়ো ভাবলেন, “আমি কি বলতে পারি, কেন তুমি সোনালকে বেশি পছন্দ করবে আমার চেয়ে সোনালি ? আকাশ কি কোনোদিন তাতে-পোড়া পৃথিবীকে বলতে পারে – তুমি বিষ্টিব ফোটাগুলিকে রোদেব চেয়ে কেন ভালোবাসবে ? না, মাটিই বলতে পারে আকাশকে —তুমি বিষ্টিকেই বরণ করে, আলো-কে চেয়ে না ! সোনালিয়া, সে বনের দুলালী, অরণ্য তো তাকে আমার সঙ্গে বাইরে —দূরে পাঠাতে পারবে না ; সে দূত পাঠিয়েছে ঘন বনের সবুজ সোনাল-পাখিটি ; ওরি সঙ্গে কোনদিন চলে যাবে ঝরা ফুল ঝরা পাতার স্বপ্ন-বিছানো গহন-বনের অন্দরের পথে সোনার আঁচলে ঝিলিক দিয়ে সোনার পাখি । আর আমি” – বলে কুঁকড়ে নিশ্বাস ফেললেন। —‘কাঠঠোকরা ঠিকই বলে, যেখানে যার বাসা, সেইখানেই তার ভালোবাসা । আমার সবই সেই পাহাড়তলির আকাশের নিচে —আর সোনালির সবই এই বনের তলায় যেদিন দেখা দেবে, সেদিন তো কেউ-কাউকে যেয়ে না’ বলে রাখতে পারব না ; কেবল এইটুকুই সেদিন বলবার থাকবে —ভুলে না বন্ধু, মনে রেখে । সে আর-একদিন ;.দুজনে অশোক-তলাটিতে দাড়িয়ে ; সূর্য br6t
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৯৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।