তোমাকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিতে এসেছে। কেমন করে যে এই বিপদসাগর পার হব ভাবছি ? ভীমসিংহ আরও বলতে যাচ্ছিলেন, হঠাৎ একটা কালো-পেচা চিৎকার করে মাথার উপর দিয়ে উড়ে গেল; তার প্রকাণ্ড দুখান কালো ডানার ঠাণ্ড বাতাস অন্ধকার ছাদে রানা-রানীর মুখের উপর কার যেন দুখান। ঠাণ্ডা হাতের মতো বুলিয়ে গেল। পদ্মিনী চমকে উঠে রানার হাত ধরে নেমে গেলেন । সমস্ত রাত ধরে তার মন বলতে লাগল—একী অলক্ষণ ! একী অলক্ষণ ! তার পরদিন পুবের আকাশে ভোরের আলো সবে মাত্র দেখা দিয়েছে, এমন সময় একজন রাজপুত সওয়ার পাঠান-শিবিরে উপস্থিত হল । বাদশা আল্লাউদ্দীন তখন রুপোর কুর্সিতে বসে তশবী-দান জপ করছিলেন ; খবর হল, রামা লক্ষ্মণসিংহের দৃত হাজির ' বাদশা হুকুম দিলেন, হাজির হোনে কো কহো । রানার দূত তিনবার কুর্নিশ করে বাদশার সামনে দাড়িয়ে বললে, রানা জানতে চান বাদশার সঙ্গে তার কিসের বিবাদ যে আজ এত সৈন্তা নিয়ে তিনি চিতোরে উপস্থিত হলেন ? আল্লাউদ্দীন উত্তর করলেন, ‘রানার সঙ্গে আমার কোনো শক্রতা নেই, আমি রানাব খুড়ে। ভীমসিংহের কাছে পদ্মিনীকে ভিক্ষা চাইতে এসেছি, তাকে পেলেই দেশে ফিরব।” দূত উত্তর করলে, শাহেনশা, আপনি রাজপুত-জাতকে চেনেন না, সেই জন্য এমন কথা বলছেন। রানার কথা ছেড়ে দিন, আমরা তুঃখী রাজপুত, আমরাও প্রাণ দিতে পারি তবু মান খোয়াতে পাবি না ; আপনি রানীর আশা পরিত্যাগ করুন, বরং শাহেনশার যদি অন্ত-কিছু নেবার থাকে তবে— আল্লাউদ্দীন দূতের কথায় বাধা দিয়ে বললেন, হিন্দুস্থানের বাদশার এক কথা— হয় পদ্মিনী, নয় যুদ্ধ। রানার দূত পিছু হটে তিনবার কুর্নিশ করে বিদায় হল । সেইদিন সন্ধ্যাবেল চিতোরের রাজসভায় সমস্ত রাজপুত-সর্দার একত্র হলেন, কী করে চিতোরকে মুসলমানের হাত থেকে রক্ষা করা যায়? রাজস্থানের রাজ-মুকুটের সমান চিতোর ; রাজপুতের > 0 &
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১১৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।