প্রাণের চেয়ে প্রিয় চিতোর। মুসলমানের প্রায় ভারতবর্ষ গ্রাস করেছে, তাদের সঙ্গে যুদ্ধে কত বড়ো-বড়ো হিন্দুরাজার রাজত্ব ছারখার হয়ে একেবারে লোপ পেয়ে গেছে, কিন্তু চিতোরের সিংহাসন সেই পুরাকালের মতো এখনো অটল, এখনো স্বাধীন আছে। কী করে আজ এই ঘোর বিপদে চিতোরের উদ্ধার করা যায় ? অনেকক্ষণ ধরে অনেক পরামর্শ তর্ক-বিতর্ক চলল। শেষে রানা ভীমসিংহ উঠে বললেন, পদ্মিনীর জন্যে যখন চিতোরের এই সর্বনাশ উপস্থিত তখন না হয় পদ্মিনীকেই পাঠানের হাতে দেওয়া যাক, আমার তাতে কোনো দুঃখ নেই ; চিতোর আগে না পদ্মিনী আগে ? কথাটা বলে ভীমসিংহ একবার রাজসভার এক পারে, যেখানে শ্বেতপাথরের জালির পিছনে চিতোরের রানীরা বসেছিলেন, সেইদিকে চেয়ে দেখলেন ; তারপর সিংহাসনের দিকে ফিরে বললেন, “মহারান কী বলেন ? লক্ষ্মণসিংহ বললেন, ‘যুদি সমস্ত সর্দারের তাই মত হয়, তবে তাই করা কর্তব্য। তখন সেই রাজভক্ত রাজপুত সর্দারের প্রধান রাজসভায় উঠে দাড়িয়ে বললেন, ‘রানার বিপদে আমাদের বিপদ, রানার অপমানে আমাদের অপমান। পদ্মিনী শুধু ভীমসিংহের নন, তিনি আমাদের রানী ও বটে। কেমন করে আমরা তাকে পাঠানের বেগম হতে পাঠিয়ে দেব ? পুথিবীমৃদ্ধ লোক বলবে, রাজস্থানে এমন পুরুষ ছিল না যে তারা রানীর হয়ে লড়ে ? মহারানা, আমরা প্রস্তুত, হুকুম হলে যুদ্ধে যাই ! মহারান হুকুম দিলেন, ‘আপাতত যুদ্ধের প্রয়োজন নেই, সাবধানে কেল্লার দরজা বন্ধ রাখ, আল্লাউদ্দীন যতদিন পারে চিতোর ঘিরে বসে থাকুক ! সভাস্থলে ধন্য ধন্য পড়ে গেল। চারিদিকে চিতোরের সমস্ত সামন্ত-সর্দার তলোয়ার খুলে দাড়ালেন, সমস্ত রাজসভা একসঙ্গে বলে উঠল, 'জয় মহারানার জয়! জয় ৷ ভীমসিংহের জয়! জয় পদ্মিনীর জয় ? রাজসভা ভঙ্গ হল । সেই সময় রাজসভার এক-পারে, শ্বেতপাথরের জালির আড়াল থেকে সোনার পদ্মফুল লেখা একখানি লাল রুমাল সেই রাজভক্ত সর্দারের মাঝে এসে পডল । সর্দারের পদ্মিনীর হাতের రి రి
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১১৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।