ভীমসিংহের হাত ধরে পদ্মিনীর মহলে শ্বেতপাথরের রাজদরবারে উপস্থিত হলেন । সেখানে আর জনমানব ছিল না— কেবল হাজারহাজার মোমবাতির আলো, সেই শ্বেতপাথরের রাজমন্দিরে, যেন আর-একটা নতুন দিনের স্বষ্টি করেছিল। রানা ভীম সেই ঘরে সোনার মছনদে বাদশাকে বসিয়ে তার হাতে এক পেয়ালা সরবৎ দিয়ে বললেন, শাহেনশা, একটু আমিল ইচ্ছা করুন। আল্লাউদ্দীন সেই আমিলের পেয়ালা হাতে ভাবতে লাগলেন— যদি এতে বিষ থাকে, তবে তো সর্বনাশ ! রাজপুতের মেয়েরা শুনেছি, শত্রুর হাতে অপমান হবার ভয়ে অনেক সময় এই রকম আমিল খেয়ে প্রাণ দিয়েছে। বাদশা পেয়ালা হাতে ইতস্তত করতে লাগলেন । রানা ভীম আল্লাউদ্দীনের মনের ভাব বুঝে একটু হেসে বললেন, শাহেনশা, বিষের ভয় করবেন না । মহারান। স্বয়ং যখন আপনার কোনো বিপদ না ঘটে সে জন্য দায়ী, তখন আজ যদি আপনি সমস্ত চিতোর এক ঘুরে আসেন তবু একজন রাজপুত আপনার গায়ে হাত তুলতে সাহস পাবে না! আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন। অতিথিকে আমরা দেবতার মতো মনে করি। আল্লাউদ্দীন তাড়াতাড়ি বলে উঠলেন, ‘রান, আমি সে কথা ভাবছিনে। আমি ভাবদিলেম, আজ যেমন নির্ভয়ে আমি তোমার উপর বিশ্বাস করছি, তেমনি তুমিও আমাকে বিশ্বাস করতে পার কি না ? আল্লাউদ্দীন মুখে এই কথা বললেন বটে কিন্তু সেই আমিলের পেয়ালায় চুমুক দিতে তার প্রাণ কাপতে লাগল। তিনি অল্পে-আল্পে সমস্ত আমিলটুকু নিঃশেষ ক , অনেকক্ষণ চুপ করে বসে রইলেন। শেষে যখন দেখলেন বিষের জ্বালার বদলে র্তার শরীর মন বরং আনন্দে প্রফুল্ল হয়ে উঠল, তখন বাদশ ভীমসিংহের দিকে ফিরে বললুেন, তবে আর বিলম্ব কেন ? এখন একবার সেই আশ্চর্য সুন্দরী পদ্মিনী রানীকে দেখতে পেলেই খুশি হয়ে বিদায় হই ।” তখন রানা ভীম আলিপো দেশের প্রকাগু একখানা আয়নার সম্মুখ থেকে একটা পর্দা সরিয়ে দিলেন। শাকচক্ষু জলের মতো নির্মল 》e
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১১৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।