গোরা বাদল উপস্থিত হলেন । বাদশা মহারানার মোহর করা চিঠি হাতে নিয়ে পড়তে লাগলেন । তাতে লেখা রয়েছে—পদ্মিনীকে বাদশার হাতে দেওয়াই স্থির হল, তার বদলে রানা ভীমসিংহের মুক্তি চাই ! আরও, রাজরানী পদ্মিনী সামান্য স্ত্রীলোকের মতো দিল্লীতে যেতে পারেন না, তার প্রিয় সখীরাও যাতে পদ্মিনীর সঙ্গে থেকে চিরদিন তার সেবা করতে পারেন, বাদশাহ যেন সে বন্দোবস্ত করেন ; তাছাড়া চিতোরের রানী পদ্মিনীকে শাহেনশার শিবিরে পৌছে দেবার জন্যে যে-সব বড়ো-বড়ো ঘরের রাজপুতনী সঙ্গে যাবেন, তাদের যাতে কোনো অসম্মান না হয়, সেজন্য বাদশা তার সমস্ত সৈন্য কেল্লার সামনে থেকে কিছু দূরে সরিয়ে রাখবেন । শেষে মহারানার ইচ্ছা যে, এর পর থেকে আল্লাউদ্দীন আর যেন তার সঙ্গে শত্রুত না করেন। চিঠিখানা পড়ে বাদশার মন আনন্দে মৃত্য কবতে লাগল ; তিনি হাসিমুখে গোর বাদলের দিকে ফিবে বললেন, “বেশ কথা ! আমি আজ রাত্রের মধ্যেই সমস্ত ফৌজ কেল্লার সামনে থেকে উঠিয়ে নেব, রানীর আসলার কোনোই বাধা হবে না । তোমরা মহারানাকে জানা ওগে তাব সকল কথাতেই আমি বাজী হলেম ? গোরা বাদল বিদায় হলেন । বাদশ, কেল্লাল সামনে থেকে সৈন্ত উঠিয়ে নিতে হুকুম দিলেন। একদিনের মধ্যে এত সৈন্ত অহা জায়গায় উঠিয়ে নেওয়া সহজ নয়। বাদশা বললেন – তাম্বুকানান্ত, গোলাগুলি, অস্ত্রশস্ত্র, আসবাব-পত্র যেখানকার সেইখানেই থাক, কেবল সেপাইরা নিজের ঘোড় নিয়ে একদিনের মতো অন্ত কোথাও আশ্রয় নিক। তাতেও প্রায় সমস্ত রাত কেটে গেল । পরদিন সূর্যোদয়েব সঙ্গে-সঙ্গে চিতোরেব প্রধান ফটক রামপালের উপর কড়কড় শব্দে নাকাড়া বাজতে লাগল। বাদশ দেখলেন, চিতোরের সাতটা ফটক একে-একে পাব হয়ে চার-চার বেহারার কাধে, প্রায় সাতশে ডুলি তার শিবিরের দিকে আসছে— মাঝে রানী পদ্মিনীর চিনা-পাত মোড়া সোনার চতুৰ্দোল, তার
- * ९