সবুজ খেতের মাঝে মাটির ঢেলা ফেলে পাখি আর ছাগল তাড়াতেতাড়াতে মেয়েটিও রাজকুমারের কথা ভাবছিল কিনা কে জানে ; কিন্তু এক সময় তার হাত থেকে ঠিকরে একটা মাটির ঢেল৷ সেই আমবাগানের ধারে ঘোড়ার পায়ে এসে লাগল ! হঠাৎ ঘোড়ার তড়বড় শব্দে চমকে উঠে রাজকুমার চেয়ে দেখলেন আমবাগানের ফঁাকে একটুখানি সবুজ খেত— তারই মাঝে সেই নীল-আঙ্গিয়া, পীলা-ওড়নি কৃষকনন্দিনী ! পশ্চিম বাতাসে আড়রের খেতে ঢেউ উঠেছে, একদল টিয়া পাখি বাক বেঁধে উড়ে চলেছে, বেলা-শেষে দিনের আলো নিবু-নিবু, পাথরের মতো পরিষ্কার আকাশ, তার কালো মেঘের সরু রেখা— রাজকুমার শিকার শেষে বাড়ি চলেছেন । নদীর ধারে যেখানে গ্রামের পথ আর মাঠের রাস্ত এক হয়েছে সেইখানে আবার তুজনে দেখা হল— বালিকা মাথায় দুধের কলসী নিয়ে মাঠ ভেঙে গ্রামে চলেছে— সঙ্গে দুটি চিকন কালো ছানা ভৈষ ! পরদিন উজল গ্রামের সেই বালিকার ঘরে বিবাহের প্রস্তাব নিয়ে রাজকুমারের দূত এল ! বালিকার পিতা চন্দাসে বংশের চৌহান রাজপুত কিছুতেই গেহলোট বংশে কন্যাদানে সম্মত নয়— রাজকুমার হতাশ হয়ে রাজ্যে ফিরলেন। এদিকে সেই বৃদ্ধ রাজপুতেব ঘরে গৃহিণীর কাছে. পাড়াপড়শীর দুয়ারে লাঞ্ছনা-গঞ্জনার সীমাপরিসীমা রইল না। এমন কাজও করে ? হাতের লক্ষ্মী পায়ে ঠেলতে আছে ? যেমন বুদ্ধি, তেমনি চিরটা কাল চাষা হয়েই থাক । বুড়ে কিন্তু সকলের কথায় একই জবাব দিত, তোমরা যাই বল, আমি কিন্তু লছমীকে কখনেই রাজবাড়িতে পাচ সতীনের দাসী করে দিতে পারিনে ; তার চেয়ে আমার মেয়ে গরীবের ঘরে গিন্নী হয়ে থাক সেও ভালো ।” কিন্তু বুড়োর প্রতিজ্ঞ বেশিদিন রইল না। চিতোর থেকে দূত এল, পদ্মিনী রানী লিখছেন : ‘আমি নিঃসন্তান, তোমার কন্যাকে >&br
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৪০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।