ভিক্ষা চাই ; আমার আশীর্বাদে চিতোরের রাজলক্ষ্মী তোমার বংশকে বরণ করুন ? সতীর কথা ব্যর্থ হয় না। লছমীর সন্তান যে চিতোরের সিংহাসনে বসবে, সে বিষয়ে আর সন্দেহ রইল না । ধুমে-ধামে আলো জালিয়ে, ঘোড়া সাজিয়ে বর-বেশে যুবরাজ এলেন যেন কোনো স্বপ্নের রাজ্য থেকে । রাজপুত্র এসে উজলাগ্রামে উদয় হলেন— আনন্দে, আলোয়, নাচে-গানে সমস্ত গ্রাম এক রাতের মতো উৎফুল্ল হয়ে উঠল। সুখের বাসর আনন্দের মধ্যে কখন কাটল বোঝা গেল না । এক বৎসর পরে যুবরাজ লছমীরানীকে আর এক-মাসের শিশু রাজপুত্র হাম্বিরকে উজলাগ্রামে রেখে পাঠানের সঙ্গে যুদ্ধে গেলেন। সে-যুদ্ধে যে গেল তাকে আর ফিরতে হল না। রান গেলেন, রাজপুত্রেবা গেলেন, ভীমসিংহ গেলেন, রানী পদ্মিনী, রাজবধ, রাজমাতা, সকলে গেলেন । চিতোর-লক্ষ্মী অন্তর্ধান করলেন । রইলেন কেবল উজলাগ্রাম হান্ধিবকে নিয়ে রানী লছমী, তার কৈলোরের কেল্লায় মেবারের রানার বংশধব অজয়সিংহ । একদিকে শেরোনাল বলে একখানি ছোটো গ্রাম, তার একদিকে আরাবল্লী পর্বত, মাঝে একটি ছোটে পাহাড়ের উপর কৈলোরের পুরাতন কেল্লা । এক সময়ে পাহাড়ী ভৗলদের শাসনে রাখার জন্তো ওই কেল্ল প্রস্তুত হয়েছিল । তখন চিতোরেব মহাবান বছরের মধ্যে প্রায় চারমাস এখানেই কাটাতেন । তখন কেল্লার শ্রী-ই ছিল এক । তারপর পাহাড়ী জাত যখন ক্রমে অধীন হয়ে শত্রুতা ছড়ে বশ্যত মানলে তখন আর বড়ে একটা এখানে আসবাব প্রয়োজন হত না । কচিৎ দুই একজন রাজকুমার শিকারে এসে লাত্রিবাস করে যেতেন কেল্লাও ক্রমে ভেঙে চুৰুে বন-জঙ্গল আর কাটাগাছে পরিপূর্ণ হয়েছিল । ঝড় বৃষ্টি বিদ্যুতের মাঝে চিতোরের রানা লক্ষ্মণসিংহের বংশধর রাজ্যহারা অজয়সিংহ স্ত্রী-পুত্র পরিবার নিয়ে একদিন এই কেল্লায় আশ্রয় নিলেন। সে দুঃখের রাত কী খে কেটেছিল কে বলবে! છે રાજે ७५. २-->
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৪১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।