অন্ধকারের ভিতর দিয়ে হাম্বির এক চলেছেন। একবার তার পায়ে ঠেকে কী একটা গড়গড় করে গড়িয়ে গেল। হাম্বির সেটা হাতে তুলে দেখলেন একটা মড়ার মাথা ! কখনো তার পায়ের চাপনে একখানা শুকনো মড়ার হাড় মড়মড় করে গুড়িয়ে গেল । কখনো পাহাড়ের ফাটল বেয়ে একটা গাছের শিকড় নেমেছে, সেট। তার হাতে ঠেকতে মনে হল যেন সাপের গায়ে হাত পড়েছে ; কখনো তিনি দূরে থেকে যেন ফোস-ফোস আওয়াজ শুনতে পাচ্ছেন ; কখনো মনে হচ্ছে কারা যেন ফিসফিস করে কথা বলছে ; এক-এক জায়গায় আলেয়া একবার দপ করে জ্বলেক্ট নিবে যাচ্ছে ; কোথাও মনে হচ্ছে পাথরের দেয়াল কত দূরে যেন সরে গেছে ; তাবার এক-এক জায়গায় দেয়াল যেন চেপে পড়তে চাচ্ছে । এক জায়গায় শুনলেন মাথার উপর থেকে কাদের যেন কান্নার শব্দ আসছে ; পা যেন তার ছাইগাদায় বসে যেতে লাগল ; মাথার উপর হাম্বির চেয়ে দেখলেন না, ক দূরে নীল আকাশ দেখা যাচ্ছে— চারিদিকে তার গোল পাথরের দেয়াল, কোনো দিকে আর যাবার পথ নেই! সেই অন্ধকূপের ভিতর হাঙ্গিব চারিদিকে হাতড়ে বেড়াতে লাগলেন। নিচে পথ নেই, উপরে পথ নেই, তাশে-পাশে পাথরের দেওয়াল, তারি মাঝে স্থপাকার ছাই, চলতে গেলে পা বসে যায়। কতক্ষণ হাম্বির সেইখানে দাড়িয়ে রয়েছেন, এমন সময় পাথরের দেয়ালের উপর থেকে শুনলেন শাখ ঘণ্টার শব্দ আসছে ! দেখতেদেখতে হাঙ্গিবের চোখের সামনে খানিকটা পাথরের দেয়াল তুফাক হয়ে সরে গেল ; সেই ফাক দিয়ে হাম্বির দেখলেন, গেন্দয়া কাপড় রুদ্রাক্ষের মালা পরা পাচজন ভৈরবী আগুনের উপরে একখানা প্রকাণ্ড লোহার কড়া ঘিরে বসে রয়েছেন। অনেকদূরে কারুণী দেবীর সোনার মূতি আগুনের আলোয় বকবক করছে। হাম্বির নির্ভয়ে কারুণীর মন্দিরে যেখানে ভৈরবীরা বসে রয়েছেন, সেখানে উপস্থিত হলেন । হাম্বিরকে দেখে ভৈরবীরা বিকট চিৎকার করে বলে উঠলেন, ‘কেরে তুই! কী চাস ? )@や
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৬৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।