পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

র্তার চেয়ে পচিশ বছরের ছোটাে মকুল, সেই হাসি মুখে ছোটাে ভাই মকুল— যে এখনো চলতে শেখেনি, বলতে শেখেনি, সে কি তার আপনার নয় ? সকালে সন্ধ্যায় রাজসভাতে নিয়ে যাবার সময় সে যখন তার ছোটো দুটি হাত দিয়ে তার গলা জড়িয়ে ধরে, তখন কি আর চণ্ডের কোনো তুঃখ মনে থাকে ? চণ্ড কতবার মনে করেছেন চলে যাই, কিন্তু এই ছোটো ভায়ের ছোটো হাতের বঁাধন— তার সব দুঃখের উপরে কচি দুখানি হাতের পরশ– একে ছেড়ে যাওয়া, একে কাটিয়ে বেরিয়ে পড়| চণ্ডের আর হয়ে ওঠে না ! তিনি বছরের পর বছর সব দুঃখ সয়ে এই ছোটো ভাই মকুলকে একদিন মেবারের রাজসিংহাসনে বসবার মতো উপযুক্ত করে, মানুষ করে তুলতে লাগলেন। দারুণ গরমের দিনে সকাল-সকাল সভা ভঙ্গ করে মকুলকে নিয়ে চণ্ড খোলা ময়দানে গোলা-খেলা করতে যান, চণ্ড চড়েন এক ঘোড়ায় আর এক টাটুতে মকুল— মাথার উপরে রোদ বী-বী করছে, কোথাও একটু ছায়া নেই, এরি মাঝে দুই ভায়ের ঘোড়া বিদ্যুতের মতো গোলার পিছনে পিছনে ছুটে-ছুটে চলেছে— মুখে চোখে আগুনের মতো বাতাস লাগছে, তুই ভায়ের মুখ রক্তের মতো রাঙা হয়ে উঠেছে সূর্যের তাপে । আবার হয়তো কোনো দিন ঘোরতর মেঘ করে কুপ-ৰূপ বৃষ্টি নেমেছে—চণ্ড চলেছেন মকুলকে নিয়ে শিকারে – কাদা ভাঙতে-ভাঙতে, জলে ভিজতেভিজতে, থৈ-থৈ করছে নদীতে জল, সাতার দিয়ে তা পেরিয়ে, বাড়ি থেকে অনেক দূরে গ্রাম ছাড়িয়ে অনেকখানি জঙ্গল আর জলার মাঝে। শীতের দিনে তাদের খেলা পাহাড়ে-পাহাড়ে। সেখানে বরফের মতো বাতাস ধারালে ছুরির মতো বুকে এসে লাগে। এমনি করে মকুল মানুষ হচ্ছেন, দিন-দিন শক্ত’ হচ্ছেন, তার খাওয়া-পর খেলাধুলা রাজার ছেলে বলে কিছু যে আরামের ছিল তা নয়— চণ্ড মেবারের একজন সামান্য রাজপুতের ছেলের সঙ্গে যে একদিন মেবারের সর্বময় কর্তা হবে তার কোনো বিষয়ে কিছু তফাত রাখলেন না ; এমনি করে লখারানা চণ্ডকে মানুষ করেছিলেন, আর ঠিক Ꮌ©&