পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তেমনি করে চণ্ড তার ছোটাে ভাইকে সিংহাসনের উপযুক্ত হবার, আপদে-বিপদে দুঃখে-কষ্টে বীরের মতো নির্ভয়ে থাকবার জন্তে ছোটোবেলা থেকেই তৈরি করছেন। এটা কিন্তু মকুলের মায়ের ভালো লাগে না। তিনি চান গরমে মকুল পাখার বাতাসে, বাদলে ছাতার তলায়, শীতে লেপ-তোশকের মধ্যে থেকে মোমের পুতুলটির মতো গোলগাল মোটাসোটা হয়ে উঠুক ! এর জন্যে মকুলকে আর কখনো কখনো চণ্ডকেও মহারানীর কাছে গঞ্জন সইতে হয়। মকুল সে ছেলেমানুষ, মায়ের ধমকে কখনো রাগ করে, কখনো খানিক কাদে আবার একটু পরেই সব ভুলে যায়— চণ্ডের প্রাণে কিন্তু রানীর বাক্যবাণ তীরের মতে গিয়ে বাজে । এক-একদিন তিনি আপনার খুব প্রাণের যারা বন্ধু বুড়ো-বুড়ে সর্দার তাদের কাছে বলেন– “আর না, এখানে আর থাকা চলে না । সবাই বলে আমি আমার ভাইকে বশ করে নিয়ে নিজে রাজাগিরি করছি ; সে যখন আমার হুকুমে ওঠে-বসে, তখন আমিই হলেম সত্যি রাজা আর সে একটা সাক্ষিগোপাল – নামমাত্র মেবারের রাজা । আপনারা আমায় ছুটি দিন, আমি তান্ত রাজ্যে গিয়ে থাকি ! বুড়ো সর্দারেরা বলেন, এখনো সময় হয়নি, যুবরাজ, আরো কিছুদিন থাক, মকুল আর একটু উপযুক্ত হয়ে উঠুক। চণ্ড চান কোনো সর্দারের হাতে মকুলকে মানুষ করবার ভার দিয়ে বেরিয়ে পড়েন, কিন্তু কোনো সর্দার সে ভার নিতে চাই*ে তবে তো! তারা কেবলই বলেন— আমরা মকুলের জন্য সব করতে প্রস্তুত, কিন্তু যুবরাজ তবু আমরা পর মাত্র আর আপনি তার ভাই। চণ্ড আর কোনো জবাব দিতে পারেন না । বাপ থাকলে কেউ তো চণ্ডকে মকুলের জন্য কষ্ট নিতে বলত না ; কিন্তু এখন ভাই যদি তাকে না দেখে তবে মকুলকে রাজা হবার মতো শিক্ষা-দীক্ষা দিয়ে মানুষ করে তোলে কে ? এমনি করে দিন কাটছে, ইতিমধ্যে একদিন– কাল বৈশাখের রাতন্ত্রপুরে অন্ধকার দিয়ে বড়ো-বড়ো শাদা মেঘ একখানার পর {{సి