পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একখানা আস্তে আস্তে পুব থেকে পশ্চিমে চলেছে, মনে হচ্ছে যেন বড়ো-বড়ো পাল তুলে আকাশের এপার থেকে ওপারে, অন্ধকারে পাড়ি দিচ্ছে একটির পর একটি নৌকা! একটি তারা নেই, একটু শব্দ নেই। চণ্ড সারাদিনের কাজ সেরে সেই দিকে চেয়ে আছেন ঘরের আলো নিবিয়ে একলাটি, রাজবাড়ির সবাই ঘুমিয়ে, কেবল চণ্ড জেগে একা। আজ চণ্ডের বুকের ভিতরে একটা বেদনা থেকে-থেকে দুই পাজরের হাড়গুলো মোচড় দিয়ে-দিয়ে যেন ভাঙতে চেষ্টা করছে ! ব্যথা যে কিসের, বেদন যে কতটা, চণ্ড তা বুঝতে পারছেন না ; র্তার কেবলি মনে হচ্ছে মকুলকে একবার কাছে ডাকি কিন্তু উঠতেও পারছেন না, ডাকতেও পারছেন না । অন্ধকারের মধ্যে একলটি চুপ করে পড়ে রয়েছেন। চণ্ডের দেহ-মন সমস্ত অসাড় হয়ে মরে গেছে কেবল র্তার চোখ যেন জীবনের সব আলোটুকু টেনে নিয়ে প্রহরের পর প্রহর বর্ষা রাতের অন্ধকারে কী যেন সন্ধান করে ফিরছে! একটা ঝড় অনেকখানি ঠাণ্ডা হাওয়ার ধাক্কায় গাছপালা ঘরবাড়ি জলস্থল আকাশ দুলিয়ে চলে গেল, অনেকখানি বৃষ্টির জল ঝরঝর করে চারিদিকে ঝরে পড়ল, বিদ্যুৎ বাজ খানিক চমক দিয়ে ধমক দিয়ে চলে গেল ; তারপরে মেঘ তাস্তে-আস্তে পাতলা হয়ে এল, রাত্রি শেষের সঙ্গে রুপোর মতো শাদ আলে৷ ছেড়া-চেড়া মেঘের ফাক দিয়ে এসে অন্ধকারকে ক্রমে ফিকে করে ভোরের একটি ছোটো পাখির গানের সঙ্গে-সঙ্গে ক্রমেই ফুটে উঠতে লাগল ; ঠিক সেই সময় বাদলা দিনের সকাল বেলায় ফুটন্ত কচি আলোর মাঝখানে একখানি জলে ভরা মেঘ ! চণ্ড দেখছেন, সে কিবা চোখ জুড়ানো শান্ত রূপ— যেন তার মা। চণ্ড সেই মেঘের দিক থেকে আর চোখ ফেরাতে পারছেন না, সারারাত্রি অন্ধকারের মধ্যে র্তার দুই চোখ যে এরই সন্ধানে, তার মরা মায়ের সন্ধানে ফিরছিল, এতক্ষণে দেখা পেলেন ; তার বুকের বেদনা, টানা-তার ছেড়ে দিলে যেমন, তেমনি কাপতে-কাপতে একেবারে শান্ত হয়ে গেল। সেই সারারাতে বাদল দিয়ে ধোয়া মেঘ, সেই মায়ের চোখের ఆరి