রান কুন্ত রানা মকুলের দুই খুড়ে ছিলেন— চাচা আর মৈর। যদিও দুজনে রাজার ছেলে, কিন্তু তাদের মা ছিলেন কাঠুরের মেয়ে ; সেইজন্য রানাদের চেয়ে তার মানে খাটো ! মেবারের সিংহাসনেও বসবার তাদের কোনো উপায় ছিল না। আর সে চেষ্টাও তার করেননি— মকুল তাদের যথেষ্ট জমিজমা দিয়েছিলেন। মকুলজী যদি তার দুই চাচাকে কেবল রাজসভার শোভামাত্র করে রেখে চুপচাপ থাকতেন, তবে আর কোনো গোলই হত না ; তা না, একদিন দুই খুড়োকে সাতশে করে সেপাইয়ের সর্দার বানিয়ে দিয়ে যুদ্ধে পাঠিয়ে মকুল বানা একটু মজা দেখতে চাইলেন। খুড়ো দুজনের কাজের মধ্যে ছিল দিবারাত্রি আফিং খেয়ে ঝিমানো ! হঠাৎ সর্দার বনে গিয়ে লড়াইয়ে যেতে হলে, তারা নাজানি কী বিপদেই পড়বেন— কোথায় থাকবে আফিং, কোথায় বা তামাক ? দুধের পুরু সর, রাবড়ি, মালাই সেখানে তো পাওয়াই যাবে না ; উলটে বরং মাঠের হিম খেয়ে মরতে হবে — মাদেরিয়ার ভীলদের হাঙ্গামা মেটাতে গিয়ে মকুল এই তামাশা দুই খুড়োকে নিয়ে শুরু করলেন । অনেক দিন বেশ আমোদে কাটল , তামাশার সঙ্গে সাতশে সেপাইয়ের সর্দারের মাসোহারা যতক্ষণ আছে, ততক্ষণ ভাইপোটিকে আমোদ দিতে দুই খুড়োর আপত্তি হল না ; কিন্তু ঠাট্টাতামাশা ক্রমেই একটু কড়া-রকম হতে লাগল। এমন কি, আযিংচি হলেও তামাশার খোচার দিকে চোখ বন্ধ করে ঝিমানো ই খুড়োর পক্ষে অসম্ভব হয়ে উঠল। কিন্তু ভাইপোর অনুগ্রহ ছাড়া বেচারাদের পেট চালাবার অন্য উপায় ছিল না ; কাজেই মনের রাগ তাদের মনেই জমা হতে লাগল! আর কোনে,-কোনো দিন মুখ ফসকে বেরিয়েও আসতে শুরু করলে! এতে মকুলজীর আমোদ আরো ১৭৯
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৯১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।