এদিকে গ্রামের ঘরে-ঘরে এই চর্চা, ওদিকে পাহাড়ের উপরে দুই বুড়োতে সেই কুড়োনো মেয়েকে তাদের সব ভালোবাসা দিয়ে আদরযত্নে মানুষ করেছে। মেয়েটি তাদের প্রাণ, সেই ভাঙা কেল্লা, সেই মেয়ের হাসিতে, তার কচি গলার মিষ্টি কথায়, পাপিয়ার মতো তার গানের সুরে, দিন রাত ভরে রয়েছে। তার হাতে লাগানো ফুলের লতা ভাঙা দেওয়াল বেয়ে উঠে সকাল-সন্ধ্যায় ফুল ফোটাচ্ছে, গন্ধ, ছড়াচ্ছে রাজার ভয়ে দেশ-ছাড়া এই দুটো বুড়োর জন্যে। একলা কেল্লায় এই তিনটি প্রাণী। আর আছে– এক পাহাড়ী কুকুর, দেখতে যেন বাঘ। সেই কুকুরই চাকর, দরোয়ান, সান্ত্রী, পাহারা— অজানা লোক যে হঠাৎ কেল্লায় ঢুকবে, তার যো নেই! শঙ্খচিল যেমন পাহাড়ের চূড়ায় বাসা বেঁধে বাচ্চ নিয়ে থাকে, তেমনি শাদা-চুল দুই বুড়োতে সেই অগম্য পুরীতে আদরের মেয়েকে নিয়ে রয়েছেন— অনেকদিন ধরে । এমন সময় একদিন পায়ীগ্রামের দফাদারের স্বনী মেয়েটি হারাল। নদীতে ডুবে সে মরল, কি বাঘেই তাকে ধরলে কিছুই ঠিক হল না। কিন্তু সবাই ঠিক করলে যে ঐ বুড়ো সর্দার দুটো সুন্দরী দেখে মেয়েটিকে চুরি করেছে। মেয়ের বাপ পাগলের মতো হয়ে কাজকর্ম ছেড়ে দিনরাত রাতকোটের কেল্লার আশে-পাশে ঘুরতে লাগল। তার নিশ্চয় বিশ্বাস সুন্দরিয়া তার ঐ কেল্লাতেই আছে। কেননা একদিন সকালে সত্যিই সে একটি মেয়েকে এলোচুলে পাহাড়ের পাকদণ্ডি বেয়ে বেড়াতে দেখেছে— খুব দূর থেকে যদিও, কিন্তু সে যে তারই মেয়ে ত. ত কোনো সন্দেহ নেই। দফাদারকে সবাই পরামর্শ দিলে, “যাও, রানা কুম্ভের কাছে নালিশ করে গিয়ে । তোমার মেয়েটি যে ভয়ানক লোকেদের হাতে পড়েছে, কুম্ভ ছাড়া কারো সাধ্যি নেই তাকে ছাড়িয়ে আনে। বুড়ে দফাদার চলল। মরচে-ধরা তলোয়ার কোমরে বেঁধে, আর নিজের চেয়ে একটু বুড়ে এক ঘোড়ার পিঠে সওয়ার হয়ে একলা চিতোরের দিকে চলল সে । রাতকোট থেকে চিতোর ব ? দিন-রাতের পথ তা কে জানে, չե-Ֆ
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৯৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।