পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যখন উপস্থিত হলেন, তখন সন্ধ্যা উতরে গেছে— আকাশে কালো মেঘ জমে ঝড়বৃষ্টির উপক্রম হচ্ছে । গায়ে এসে রানা খবর পেলেন, কেল্লার উপরে যে বুড়ে দুটি আছেন তারা হচ্ছেন তার বাপের খুড়ে — চাচা আর মৈর। রাগে কুম্ভ লাল হয়ে উঠলেন, ‘চলে, আর দেরি নয়, এখনি সেই দুটো পাপাত্মার উচিত শাস্তি দেব! রানা কেল্লার মুখে ঘোড়া ছোটালেন দেখে সঙ্গের দুটো সেপাইও চলল— পিছনে । দফাদার অন্ধকারে খানিক ওদের দিকে হা-করে চেয়ে থেকে, ‘পাগল ! পাগল!' বলে ঘাড় নাড়তে-নাড়তে নিজের বাসায় খিল দিলে । সো-সো ঝড় বইতে লাগল আর তার সঙ্গে বৃষ্টি নামল । এক-একবার বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে, তারই আলোয় দেখা যাচ্ছে পাহাড়ের উপর রাতকোটের কেল্ল— কালো অন্ধকারের একটা ঢেউ যেন তাকাশ জুড়ে স্থির হয়ে রয়েছে। ভিজে মাটিতে তিনটি ঘোড়ার পায়ের ছপ-ছপ শব্দ হতে থাকল। রানা বললেন, ‘ঘোড়া এইখানে ছেড়ে পায়ে হেঁটে চলো ’ বনের মাঝে ঘোড়া বেঁধে তিন সেপাই পাহাড়ে চড়তে শুরু করলেন। এদিক পাহাড়ের উপরে ভাঙা কেল্লায় ছুটি বুড়ো আর তাদের সেই কুড়োনে। মেয়েটি একটি পিদিমেব একটুখানি আলোয় মস্তএকখানা অন্ধকারের মধ্যে বসে গল্প করছেন আর কেল্লার ফটকে সিংহের মতে কট। চুল প্রকাণ্ড শিকারী কুকুব হিঙ্গুলিয়া ভাঙা দরজার চৌকাঠে মস্ত থাবা দুটো পেতে মুখটি বাড়িয়ে দুই কান খাড়া করে বাইরেব দিকে চেয়ে রয়েছে— কেউ আসে কি না ভিজে বাতাসে শিকারী কুকুরের কাছে রাতে-ফোটা একটা বনফুলের গন্ধ ভেসে এল ; তার পরেই কাদের পায়ের তলায় বনে কুটো-কাট ভাঙার একটুখানি শব্দ হল। কুকুর গা ঝাড়া দিয়ে উঠে আস্তেআস্তে বার হল – জঙ্গলের পথে। বনের মধ্যে ভিজে পাহাড়ের তাত উঠছে। অন্ধকারে দু-চারটে জোনাকিপোকা লণ্ঠন জালিয়ে কী যেন কী খুঁজে বেড়াচ্ছে ! কুকুর পাহাড়ের পাকদণ্ডির ধারে চুপটি করে গিয়ে দাড়াল। রাতের বেলায় চেনা কাদের পায়ের ১৮৫