ঘুমিয়ে পড়ল। জেগে রইল কেবল একটি পিদিমের তালো— অন্ধকারের মাঝে যেন কষ্টিপাথর-ঘষা একটুখানি সোনালী রঙ । কোন সময়ে ঝড় বাতাস বন্ধ হয়ে গেছে, কেউ জানে না ; কখন রান কুম্ভ তলোয়ার খুলে ঘরে ঢুকেছেন, হঠাৎ একটা মেঘ গর্জনের সঙ্গে কড় কড় করে বাজ পড়ল । তিনজনেই চমকে উঠে দেখলেন তিনখান খোলা তলোয়ার মাথার উপরে ঝকঝক করছে । রানা কুম্ভ ডাকলেন, ‘ওঠে ? দুই বুড়োতে উঠে দাড়ালেন– মেয়েটির হাত ধরে। কুম্ভ গম্ভীর হয়ে বললেন, রানাকে খুন করেছ, রাজপুতের মেয়েকে চুরি করে পালিয়ে এসেছ, এর শাস্তি আজ তোমাদের নিতে হবে ? চাচা অবাক হয়ে বললেন, ‘রানাকে ? মৈর আস্তে আস্তে বললেন, মকুলজীকে ?’ কস্ত বললেন, “ত্যা, তারই খুনের শাস্তি এই নাও ? তখন তলোয়ার একই সঙ্গে দুই বুড়োর মাথায় পড়ল। মেয়েটি মা ! বলে একবার ডেকে অজ্ঞান হল । ঝড়ের বাতাস কোথা থেকে হঠাৎ এসে ঘরের পিদিম নিলিয়ে দিলে ! কুস্ত জানলেন, তার বাপের খুনের শাস্তি দিলেন, রাজস্তানের সবাই জানলে তাই, কেবল ক্ষেতসিংহের কাঠক্ড়োনি রানীর তুই ছেলে, যাদের মাথা কাটা গেল, র্তারাই জানলেন না, কেন রানা তাদের শাস্তি দিলেন । আর সেই মেয়েটি জানলে ন! দফাদারের ঘরে রাতারাতি কারাই বা তাকে রেখে গেল, তার কেনই বা সকালে গায়ের লোক তাকে ঘিরে বলাবলি করলে— এ-তো নয়, সে-তো নয় ! এমনি নানা কথা কয়ে সবাই মিলে সন্ধ্যাবেলায় গায়ের বাইরে, মাঠের ধারে কেন যে তাকে এক বসিয়ে দিয়ে সবাই যে-যার ঘরে চলে গেল, আর কেনই বা সারা রাত চাচা, চাচা, হিঙ্গুলিয়া, হিজুলিয়া বলে কেঁদে ডাকলেও কেউ সাড়াশব্দ দিলে না, আর সেই রাতকোটের কেল্লা অন্ধকারে কোথায় যে হারিয়ে গেল খুজে খুঁজে চলে-চলে পা ধরে গেল, তবু তে। আর সেখানে সে ফিরতে পারলে না – কেন ? কেন ? չbrծ
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২০১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।