গোলাপ-জলে ভিজানো খসখসের পাখা এমনি সব নানা কুড়েমি ও আয়েসির সাজ-সরঞ্জামের মাঝে বসে এ-গল্প সে-গল্প চলছে, কিন্তু বাইরে বইছে গরম বাতাস —এমন গরম যে পাহাড়গুলো পর্যন্ত ফেটে তো গেছেই, ঘরের মধ্যেকার দেওয়ালগুলো থেকেও তাপ উঠছে। কাজেই ঘরের মধ্যে রাজকুমারের ঠাণ্ড হতে চাইলেও বেশিক্ষণ ঠাণ্ডা রইলেন না। এ-কথায় সে-কথায় কজনের মধ্যে কে কেমন বীর, কোন লড়াই কে ফতে করে কোন-কোন পরগণা দখল করেছেন, প্রজারা কার নামে কী বলে, এমনি নানা খুটিনাটি খিটিমিটি থেকে রাজসিংহাসন উচিত মতো কে পেলে প্রজারাও সুখী হয়, দেশেরও ভালো হয় – এই তর্ক উঠল। রানার মেজছেলে পৃথ্বীরাজ যেমন সুপুরুষ তেমনি সাহসী ; বড়োছেলে সঙ্গ দেখতে মোটেই রাজপুত্রের মতো নন –শাদাসিদে ছোটোখাটো মানুষটি ধীর-গম্ভীর বড়ো-বড়ো টানা চোখ ; ছোটোছেলে জয়মল কাটখোট্টা, মোটা-সোট। যেন চোয়াড় গোছের, আর রানার ভাই সুরজমল খুব সুপুরুষ নন খুব কদাকারও নন —অনেকটা বুড়ে রানারই মতো নাক চোখ ! তিন ভায়ে বিষম তর্ক বাধল সিংহাসন নিয়ে। পৃথ্বীরাজ বললেন, ‘প্রজাদের হাতে যদি রাজা বেছে নেবার ভার পড়ে তো দেখে নিও আমাকেই রাজপুতের রাজা করবে ? জয়মল বলে উঠলেন, ওসব বুঝিনে। দেখছ এই হাতখানা । জোর যার মুলুক তার ? সঙ্গ, তিনি সবার বড়ো, একটুখানি হেসে বললেন, ভবানীমাত যাকে সিংহাসন দেবার দিয়ে বসে আছেন, বিশ্বাস না হয়, চল চারণীদেবীর মন্দিরে গুনিয়ে দেখি কার অদৃষ্টে সিংহাসন লেখা রয়েছে।" সুরজমল তিনজনকে ধমকে বললেন, “আঃ, এ সব কী কথা হচ্ছে ? দাদা শুনলে রক্ষে থাকবে না । হয়তো তোমাদের সঙ্গে আমাকেও দেশছাড়া করবেন । সিংহাসন নিয়ে নাড়াচাড়া কেন বাপু ! একি সতরঞ্চ না দাবা খেলা পেলে, যে এখনি রাজ উজির মারছ ? নাও, একটু গোলাপ-জল মাথায় দাও, ঠাগু হও ; থাক ওসব কথা । কিন্তু বাইরের গরম তখন మ\ల
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২০৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।