পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

না, আজ থেকে তুমি আমার আত্মীয় সারংদেবের ওখানে গিয়ে থাকে, চিতোরমুখে হয়ে না।’ সুরজমল তো নির্বাসনে যান। এখন পৃথ্বীরাজ বার হলেন চিতোর ছেড়ে দিকবিজয়ে। তিনি জানতেন মহারানার কাছে যদি কখনো ক্ষমা পান তো সে বীরত্ব দেখিয়ে, মেবারের শক্রদের শাসন করে তবে । রানা রাগলেও, প্রজারা পৃথ্বীরাজকে সত্যিই ভালোবাসত, কাজেই তাকে একেবারে একলা পড়তে হল না। দু-একজন করে ক্রমে একটি ছোটে-খাটো দল তার সঙ্গে জুটল, যাদের কাজই হল এখানে-ওখানে লড়াই করে বেড়ানো । এমনি এদেশে সেদেশে দল নিয়ে ঘুরে-ঘুরে বেড়াতে পৃথ্বীরাজের যা-কিছু টাকাকড়ি সম্বল ছিল গেল ফুরিয়ে । শেষে এমন দিন এল যে দিনের খোরাক, তাও জোটানো ভাব ! এখন একটা ছোটো-খাটে রাজা জয় করে না বসতে পারলে আর উপায় নেই। এই অবস্থায় পুর্থীবাজ একদিন নিজের হাতের একটা মানিকের আংটি গদাওয়ারের উঝ নামে এক জহুরীর কাছে বাধা দিয়ে কিছু টাক। আনতে পাঠালেন । এই উঝাই একদিন ঐ আংটিটা পৃথ্বীরাজকে অনেক টাকায় বেচেছিল ; আংটি দেখেই জহুরী তাড়াতাড়ি টাকাকড়ি নিয়ে যেখানে পৃথ্বীরাজ ছদ্মবেশে সামান্ত লোকের মতো একটা সরাইখানায় দিন কাটাচ্ছিলেন সেইখানে উপস্থিত হয়ে বললে, “এ কী দেখছি রাজকুমার । টাকার দরকার ছিল তা একটু লিখে পাঠালে হত, আংটিটা বাধা দিয়ে বাজারে কেন বদনাম কিনছেন ? পৃথ্বীরাজ উঝাকে চুপিচুপি বুঝিয়ে বললেন, “ওই আংটি ছাড়া আমাব এমন কোনো সম্বল নেই যে তোমার টাকা দেব, তাছাড়া আংটি তো একদিন না একদিন পেটের দায়ে বেচতেই হবে । আমার কতগুলি সঙ্গী দেখছ তো ! এদের শুকনো মুখে আধপেটা তো রাখতে পারিনে ? পৃথ্বীরাজের দুঃখের কাহিনী শুনে উঝার চোখে জল এল। সে দুইহাত জোড় করে বললে, ‘কুমার, এই নিন টাকা! আমি আংটি চাইনে। ২০৩