যাও শুরতানকে বলে গিয়ে আজ থেকে বেদনের রাজ্য তাকে দিলেম ।’ পৃথ্বীরাজ যখন শুনলেন ছোটোভায়ের কাগু, তখন রাগে লজ্জায় র্তার মুখচোখ লাল হয়ে উঠল। তিনি সেইদিনই বেদনোরের দিকে রওনা হলেন। রাজপুত্র পৃথ্বীরাজ, রাজকুমারী তারাবাই– দুজনেই সমান সুন্দর । সমানে-সমানে মিলল। ইনি দেখলেন ওঁকে, উনি দেখলেন একে । ভালোবাসলেন দুজনেই দুজনকে ; কিন্তু প্রতিজ্ঞ রয়েছে, সেটা না পূর্ণ করতে পারলে বিয়ে হবার উপায় নেই! পৃথ্বীরাজ নিজের তলোয়ার ছুয়ে শপথ করলেন টোডারাজ্য তিনি উদ্ধার করবেনই ; আর সেইদিন তারাবাইকে সঙ্গে নিয়ে আজমীরের দিকে ছদ্মবেশে রওনা হলেন । সঙ্গে গেল পৃথ্বীরাজের সেই পাচ সঙ্গী আর অনেক পিছনে চললেন শুরতান অসংখ্য রাজপুত সেপাই নিয়ে। তখন আশ্বিন মাস, মহরমের দিন ! টোড শহরের মোগল-বাজারের প্রকাণ্ড চক— নিশান আর ঘোড়া আর নানাবর্ণের কাগজের তাজিয়া, দুলফুল, পাঞ্জা, লাঠি-সড়কি, ঢাল-তলোয়ার আর লোকে-লোকে গিসগিস করছে। স্বয়ং সুলতান জুম্মা মসজিদের ছাদে উঠে তামাশা দেখছেন, এমন সময় মস্ত একটা তাজিয়ার সঙ্গে হাসান-হোসেন করতে-করতে একদল লোক ঠিক সুলতান যেখানে রয়েছেন সেখানে গিয়ে থামল। সুলতান ঝরকা থেকে মুখ বুকিয়ে দেখলেন ছজন ফকির সেই তাজিয়ার সঙ্গে ! আর বেশি কিছু সুলতানকে দেখতে হল না ; ভিড়ের মধ্যে থেকে একটা তীর এসে সুলতানের বুকের মাঝ থেকে প্রাণটি শুষে নিয়ে সে করে বেরিয়ে গেল— আকাশের দিকে ! টোডার মুলতান উলটে পড়লেন , সঙ্গে-সঙ্গে রাজপুত ফৌজ এসে শহরে হানা দিলে। রাজপুত যারা, তারা গিয়ে পৃথ্বীরাজ আর তারাবাইকে ঘিরে লড়তে লাগল— মুসলমানদের সঙ্গে। সেই অবসরে সুলতানের যত আমীর-ওমরা লুঙি ছেড়ে, দাড়ি ফেলে, বিবি আর মুরগির খাচা লুকিয়ে নিয়ে, রাতারাতি শহর ছেড়ে আজমীরের দিকে চম্পট দিল। সকালবেলা পৃথ্বীরাজ টোডা দখল করে নিলেন। راه اند
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২১৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।