ঘরের বেড়া ডিঙিয়ে একেবারে সুরজমলকে চেপে ধরলেন। দুজনে ধস্তাধস্তি চলল। পৃথ্বীরাজ খুড়োকে কাবু করেছেন, এমন সময় সারংদেব দুজনের মাঝে পড়ে পৃথ্বীরাজকে ঠাণ্ড করে বললেন, করে। কী ! দেখছ না তোমার খুড়োর অবস্থা ? কী রকম কাহিল, এক চড়ে উলটে পড়েন! দাও, ছেড়ে দাও বেচারাকে ' সারংদেবের মোড়লি সুরজমলের মোটেই ভালো লাগল না, তিনি বুক ফুলিয়ে বললেন, ‘দেখো সারংদেব, যে চাপড়টার কথা বললে সে চাপড়টা এখন আমার এই ভাইপোর হাত থেকে এলে আমি কাবু হব বটে কিন্তু তোমাদের কারু হাত থেকে এলে এই কাহিল শরীর ও শক্ত হয়ে দাড়াবে, আর এক চাপড়ের বদলে তোমার নাকে দশট। ঘুসি বসিয়ে দেবে নিশ্চয়ই। সরে দাড়াও, লড়তে হয় আমরা খুড়ো-ভাইপোতে লড়ব ; মিটমাট করতে হয় তো আমরাই করব — বুঝেচ ? সুরজমলের তেজ দেখে পৃথ্বীরাজ তাবাক হলেন, সারংদেব রেগে ফটমট করে চাইতে-চাইতে বেরিয়ে গেলেন ; ঝনাৎ করে স্থরজমল নিজের তলোয়ার খাপে বন্ধ করে বললেন, দেখে পৃথ্বীরাঙ্গ, তোমাতে আমাতে লড়াই –এতে আমি যদি মরি তোমার হাতে, তাতে কোনে। ছুঃখ ও নেই, ক্ষতিও নেই—ছেলে দুটো আমার উপযুক্ত হয়েছে, কিছু না জোটে তো মহারানার ফৌজে গিয়ে ভর্তি হবে, তবু তোমাদের বিরুদ্ধে আমার মতে তার অস্ত্র ধরবে না। কিন্তু তুমি যদি আমার হাতে মরো তবে শুধু যে আমার লজ্জার উপর জা, দুঃখের উপর দুঃখ পেতে হবে, তা নয় ; দাদার পরে তুমি না থাকলে চিতোরের দশাটা কী হবে ভেবেছ কি ? আমি লড়ব না। ইচ্ছা হয় তুমি আমাকে মেরে ফেলো, কিন্তু বন্দী করে যে আমায় নিয়ে যাবে তা হবে না। সুরজমল যে চিতোরের সঙ্গে প্রাণে-প্রাণে এক, তা বুঝতে পৃথ্বীরাজের দেরি হল না। তলোয়ার বন্ধ কবে তিনি খুড়োকে প্রণাম করলেন। সুরজমল ভাইপোকে বুকে জড়িয় ধরে বললেন, ‘এতদিনে আমার অদৃষ্টের লিখন একটু ফলল – তোমার হৃদয়সিংহাসনের খুব কাছে আম এলেম ; এখন বাকি শুধু さ>>
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২২৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।