পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বনবাসিনী তপস্বিনী, আমি হলেম রাজ্যেশ্বর মহারাজা, আমি তোমায় কেন মালা দেব ? টাকা চাও টাকা নাও, ঘর-বাড়ি চাও তাই নাও, গায়ের গহনা চাও তাও নাও । রাজ্যেশ্বরী হতে চাও– এ কেমন কথা ? রাজার কথায় শকুন্তলার প্রাণ কেঁপে উঠল, কাদতে কঁদিতে বললে— ‘মহারাজ, সে কী কথা ! আমি যে সেই শকুন্তলা— আমায় ভুলে গেলে ? মনে নেই, মহারাজা, সেই মাধবীর বনে একদিন আমরা তিন সখীতে গুনগুন গল্প করছিলুম, এমন সময় তুমি অতিথি এলে ; সর্থীরা তোমায় পা-ধোবার জল দিলে, আমি আঁচলে ফল এনে দিলেম, তুমি হাসিমুখে তাই খেলে। তারপর একটা পদ্মপাতায় জল নিয়ে আমার হরিণশিশুকে খাওয়াতে গেলে, সে ছুটে পালাল, তুমি কত ডাকলে, কত মিষ্টি কথা বললে কিছুতে এল না। তারপর আমি ডাকতেই আমার কাছে এল, আমার হাতে জল খেল, তুমি আদর করে বললে— তুইজনেই বনের প্রাণী কিনা তাই এত ভাব !— শুনে সখীরা হেসে উঠল, আমি লজ্জায় মরে গেলাম । তারপর, মহারাজা, তুমি কতদিন তপস্বীর মতো সে বনে রইলে । বনের ফল খেয়ে, নদীর জল খেয়ে কতদিন কাটালে। তারপর একদিন পূর্ণিমা রাতে মালিনীর তীরে নিকুঞ্জ বনে আমার কাছে এলে, আমার গলায় মালা দিলে— মহারাজ, সে-কথা কি ভুলে গেলে ? যাবার সময় তুমি মহারাজ, আমার হাতে আংটি প্রয়ে দিলে ; প্রতিদিন তোমার নামের একটি করে অক্ষর পড়তে বলে দিলে, বলে গেলে— নামও শেষ হবে আর আমায় নিতে সোনার রথ পাঠাবে। কিন্তু মহারাজ, সোনার রথ কই পাঠালে, সব ভুলে রইলে ? মহারাজ, এমনি করে কি কথা রাখল্লে ? বনবাসিনী শকুন্তলা রাজার কাছে কত অভিমান করলে, রাজাকে কত অনুযোগ করলে, সেই কুঞ্জবনের কথা, সেই দুই সখীর কথা, সেই হরিণশিশুর কথা— কত কথাই মনে করিয়ে দিলে, তবু রাজার মনে পড়ল না । শেষে রাজা বললেন— ‘কই, কন্যা, দেখি তোমার Ꮌ☾