হারুন্দের কথা ‘আমার নাম হারুন্দে নয়—হারুন-আল-রসিদ, বোগদাদের নবাব খাঞ্জা খ জাহান্দর শী বাদশা। এখন হয়েছি হারুনদ ’ বোগদাদের হারুন-অল-রসিদের কথা আরব্য উপস্যাসে পড়েছি, আবু হোসেনের থিয়েটারেও তাকে দেখেছি— কখনো সদাগর সেজে বেড়াচ্ছে, কখনো ফকির, কখনো বা কাফ্রি চাকর । এখন আবার তিনি উড়ে-বেহার সেজে এলেন দেখছি! অবাক হয়ে হারুন্দের মুখের দিকে চেয়ে আছি— কখন আবার সে ফকির হয়, কি বাদশা হয়! আমাকে হা করে থাকতে দেখে বলছে, আমার কথায় বিশ্বাস হল না বুঝি? আচ্ছা দেখে !" বলেই একবার হারুন্দে দাড়িতে গোফে মোচড় দিয়েছে। আর আমনি দেখি, সে হারুন্দে আর নেই! ইয়া দাড়ি, ইয়া গোফ, মাথায় বকের পালক-গোজা পাগড়ি, গায়ে চিনেপোতের জোববা-কাববা, পায়ে ঢিলে ইজের আর দিল্লির লপেটা পরে হাতে বাকা এক তলোয়ার নিয়ে দেখা দিয়েছে— হারুন বাদশা ! ফিক করে হেসে আমাকে সে যেমন সেলাম করেছে আর অমনি আমি ফস করে দেশলাই জেলে ফেলেছি। বাদশার হাতে গলায় মাথায় হীরে-মানিকের গহনাগুলো এমন ঝকঝক করে উঠেছে যে চোখে ধাধা লেগে গেছে। কিচ কিন্দে ছিল পাশে ; সে অমনি ফুঃ করে আলোটা নিভিয়ে দিয়েছে। আর কোথায় বাদশা ?— যে হারুন্দে সেই হারুন্দে ! আলো জ্বালতে হারুন্দে ভারি রেগে গেছে, কিছুতে আর গল্প বলতে চায় না। অনেক হাতে-পায়ে ধরে তাকে ঠাণ্ড করেছি তবে সে আবার গল্প বলছে, দেখলে তো আমিই ছিলুম বোগদাদের নবাব খাঞ্জা খাঁ জাহান্দর শী বাদশা হারুন-অল-রসিদ । আর ওই যে কালো কিচ কিন্দে উড়েটা তোমার ওপাশে চলেছে, ও ছিল মসুর— আমার ২৩৬
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৫০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।