কাফ্রি চাকর। তুমি ফস করে যেমন আলো জেলেছিলে ও তেমনি খপ করে তোমার মাথা কেটে ফেলতে পারে যদি আমি হুকুম দিই। দেখবে ? মসুর— না ! না! বলেই আমি হারুন্দের মুখ চেপে ধরেছি, পাছে হুকুম বেরিয়ে পড়ে। কিচ কিন্দে আমার গা টিপে বলছে, শোনো কেন! ওটা একটা পাগল, আমি কোনোপুরুষে ওর চাকর নই। একটা ভারি মজা দেখছি— কিচ কিন্দে আমার গা-টি ছুয়েছে আর তার মনের কথা পষ্ট-পষ্ট শুনতে পাচ্ছি, কিচ কিন্দেকে মুখ দিয়ে একটি কথাও বলতে হচ্ছে না । কিচ কিন্দের কথায় সাহস পেয়ে হারুন্দের মুখ ছেড়ে দিলুম। ছাড়তেই শুনলুম, হারুন্দের মুখের হুকুমটা গে। করে তার বুকের ভেতর নেমে গেল ; হারুন্দেও আর রাগ-টাগ করলে না। ‘দেখলে তো !' বলেই সে আবার গল্প শুরু করল : ‘একদিন আমি আমার বসরাই-গোলাপবাগ বলে যে বাগান সেখানে বসে গুড়গুড়িতে তামাক খাচ্ছি, আর গোলাপজলের ফোয়ারার ধারে বসে ওই মসুর আমাব পোষা বুলবুল বোস্তার সোনার খাচাটা ধুয়ে-মেজে সাফ করছে, এমন সময় সিন্ধবাদ নাবিক সাত স্থমুদরের জলে সাতখানা জাহাজ-ডুবি করে এসে হাজির— ভিজে কাপড়ে দু-হাতে আমাকে সেলাম ঠুকতে-ঠুকতে। মসুরকে বলেছি আনতে একখানা চৌকি, ন, মসুরটা এমন গাধা যে এনেছে একটা টুল । আমি রেগে মস্থরের মাথা কাটতে যাব আর অমনি সিন্ধবাদ আমার দু-পা জড়িয়ে ধরে বলছে, হুজুব মসুরকে মাপ করুন— অনেকদিনের পুরোনো চাকর। শুনুন, এবার কী আশ্চর্য কাণ্ড দেখে এসেছি। এবারে আমি জাহাজ নিয়ে হিন্দুস্থানের দিকে বাণিজ্য করতে গিযেছিলুম, কাচের বাসনের বদলে অনেক হবে-জহরত হিন্দুস্থানের বোকা লোকগুলোর কাছ থেকে ঠকিয়ে নিয়ে দেশে ফিরে আসছি, এমন সময় জাহাজ আমাদের ঝড়ে পড়ল। এমন ঝড়ও ল খনো দেখিনি, সমুদুরে এমন ঢেউও কখনো পাইনি। পাল, দড়ি, হাল, २७१
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৫১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।