পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হাতে উঠে বসেছি, মসুরও আমার পায়ের কাছে বসেছে— পা: টেপবার জন্তে । যেমন হুকুম দেওয়া— চলে কালাপানি । আমনি সতরঞ্চি আকাশ দিয়ে উড়ে চলেছে। তামাক খেতে গিয়ে হাতের কাছে নল পাইনে! মসুরটা এমনি গাধা যে গুড়গুড়িটা তুলে নিতে ভুলে গেছে। ভাগি পকেটে কটা সিগারেট ছিল, তাই রক্ষে । মসুরও বেঁচে গেল, আমিও তামাক খেয়ে আরাম পেলুম। বোগদাদ থেকে বেরিয়ে ঘণ্টাখানেক এসেছি কি না, এমন সময় মসুর বলছে, ‘হুজুর, একটা কালো মন্দিরের চুড়ে দেখা যাচ্ছে, ঠিক ওই ডানদিকে ’ তাড়াতাড়ি দূরবীন কষে দেখি সেটা মক্কার মসজিদ। মসুর এত বড়ো মসজিদ কখনো চক্ষেও দেখেনি। সে তো অবাক । আবার খানিক পরে কাফ্রিস্থানের ওপর দিয়ে আমরা উড়ে চলেছি। তখন মসুরের হাসি দেখে কে । সে বলছে, "ওই দেখা যাচ্ছে সাহার, হুজুর। ওটা একটা সমুদুর শুকিয়ে গিয়ে চড়া পড়ে গেছে। ওরই ওদিকে দেখুন একটুখানি নোনা জল, তারই ওপারে ফিরিঙ্গি মুলুক আর আমাদের রূমের বাদশার কস্তনতুনিয়ার কেল্লা দেখা যাচ্ছে। ওই দেখুন হুজুর, বালির ওপর দিয়ে সার-বেঁধে উটের কাফিলা চলেছে ; ওই খেজুরতলায় ফালহানি জল তুলছে, ওই মিসির শহর আর ওই দেখুন সেকেন্দ্রিয়ার কুতুবখান, হুজুর । ওখানে জুনিয়ার কেতাব জমা আছে। হুজুর ওই যে দেখেন দুটো পর্ব্বতের মতো, ও দুটো হচ্ছে কাফ্রিস্থানের বাদশার কবর। এত বড়ো কবর আর জগতে নেই। কেবল সোনা-রুপো-হীরে-জহরতে ঠাসা আর তারই মাঝে সব মরা মানুষ শুয়ে আছে— হাজার বরষ ধরে, তবু তাদের দেখে মনে হয় যেন এই মরেছে, নয়তো ঘুমিয়ে আছে। কিমিয়াবিদ্যার জোরে এখনো হাজার-হাজার বরষের মরা মানুষগুলো টাটকা রয়েছে হুজুর । যদি দেখতে চান তো নেমে চলুন।' আমি যমুরকে ধমকে বললুম, ওসব জীনের কারখানা আমি দেখতে চাইনে। ওদিকে ওটা কী দেখা যাচ্ছে ? 8이