‘হুজুর ওটা নীল নদী, ওখানে নীলপদ্ম পাওয়া যায়। হিন্দুদের যমুনা— আর কাফ্রিদের ওই নীল নদী। হুজুর, ওর ওপর একবার নৌকোয় করে হাওয়া খেয়ে দেখুন, দিল খুশ হয়ে যাবে। ওই নদীর ধারে আমার বাড়ি দেখা যায়, ওই আকের খেতের ধারে হুজুর, ওই আমাদের বুড়ো গাধাটি আমার দিকে মুখ তুলে চেয়ে আছে হুজুর ! আমি হিন্দুস্থানে হীরে-জহরতের খোজে যেতে চাইনে, আমাকে আমার দেশের এই আকের খেতে ছেড়ে দিয়ে যান হুজুর ' আমি দেখলেম বিপদ। মসুরকে ছাড়লে আমার তো একদণ্ড চলবে না। তামাক দেয় কে ? পা টেপে কে ? হিন্দুস্থানে একলাই বা যাই কী করে – সিন্ধবাদের জহরত লুঠ করতে ? আমি মসুরকে কিছু না বলে সতরঞ্চির ওপরে পুব-মুখো হয়ে ঘুরে বসেছি— হিন্দু রাজাদের মতো। এতক্ষণ আমি মোছলমানি কেতা-মতো পশ্চিম-মুখে বসেছিলুম, সতরঞ্চিও তাই পশ্চিম-মুখো চলছিল , সুৰ-মুখে বসতেই সতরঞ্চি পুবে ঘুরেছে আর হু-হু করে নীল-নদী পেরিয়ে একেবারে সিস্তান ঘুরে ইস্পাহানে হাজির। সেখানে বুলবুল-বোস্তার বাক, হাফেজের গান গাইতে-গাইতে আমাদের সঙ্গে সব উড়ে চলেছে ; মাটি থেকে সিরাজি সরবত আর ইস্তাম্বুল আতরের খোসবো আসছে। আমারও তেষ্টা পেয়েছে— মসুরেরও খিদে লেগেছে ; দুজনে একটা মেওয়ার বাগানের ধারে আকাশ থেকে নেমে এসেছি। মসুরকে দুটো মোহর ফেলে দিয়েছি —দু-বোতল সিরাজি সরবত আনতে । মসুরটা এমনি গাধা ! দেখি, খানিক পরে ই-মোহর দিয়ে এক ঝাকা বেদান আর আঙুর এনে হাজির । ‘সিরাজি কই রে ? কতকগুলো শুকনো বেদান নিয়ে এলি যে ? ‘হুজুর, খোদাবন্দ, জাহাপনা ! সিরাজি আর পাওয়া যাবে না । দোকানে যে কটা ছিল, এক মসুর— হুজুরের পেয়ারের গোলাম এই মসুর—তা শেষ করেছে ? २89 و دستیاس-t.aمی
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৫৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।