ভারি রাগ হল, ধী করে মসুরের নাকে এক ঘুষি বসিয়ে দিলুম। মমুরটা সিরাজি খেয়ে একেই টলছিল, ঘুষি খেতে চিৎপাত হয়ে পড়ে গেল । মেওয়ার ঝাকাটা রাস্তায় ছড়িয়ে পড়েছে, আর দেখি তার ভেতর একটা সিরাজির বোতল। আমি সেটা কুড়িয়ে মসুরকে বললুম, মসুর, যেমন আমার সঙ্গে চালাকি তেমনি থাকে তুমি এইখানে পড়ে, আমি চললুম!’ বলেই যেমন আকাশে উড়তে যাব আর মস্থর ধরেছে আমার গুড়গুড়িটা চেপে, আর বলছে, ‘হুজুর, আমি মসুর হুজুর, কসুর মাপ করুন হুজুর, আমি আপনার পুরোনো চাকর হুজুর, গুড়গুড়ি হুজুর, পায়ের জুতো হুজুর, গোলামের গোস্তাখি মাপ হোক হুজুর ' গুড়িগুড়ি যায় দেখে মসুরকে সেবারের মতো সঙ্গে তুলে নিলুম। তখন আকাশের ওপর দিয়ে সতরঞ্চি হু-হু করে উড়ে চলেছে। দেখতে-দেখতে কাবুল ছাড়িয়ে কান্দাহারে পৌচেছে। মসুর বলছে, ‘হুজুর, মেওয়াগুলো ফেলে আসা হল— অমন বেদানা ! - আমি অমনি কান্দাহারের একটা মেওয়ার বাগানে সতরঞ্চি নামিয়েছি ; সেখানে মানুষের মাথার মতো এক-একটা বেদানা ফলে আছে । মসুর তো দেখেই অবাক । ‘কেমন মসুর, এমন বেদানা কখনো দেখেচিস ? ‘হুজুর, না ! —বলেই মসুর একটা বেদান ভেঙেছে আর আমনি চারদিক থেকে কাবুলিওয়ালা মোটা লাঠি-হাতে তেড়ে এসেছে। আমি অমনি মস্বরকে টেনে নিয়ে সে করে আকাশে উঠেছি ; মসুর তো রেগেই লাল। বলে, ‘হুজুর, কেন পালিয়ে এলেন ? কাবুলিদের আচ্ছা করে ঘা-কতক দিয়ে আসতুম ! আমি মসুরকে সাবধান করে দিয়ে বললুম, মসুর, খবরদার আর এমন কাজ কোরো না। মসুর, ওরা যদি আজ তোমাকে ধরতে পারত তবে মমিয়াই করে ছেড়ে দিত, জানো । মমিয়াই দেখেছ মসুর ? ‘হঁ্যা হুজুর, হাকিমসাহেবের কাছে যে কালো মলম তাকেই তো বলে মমিয়াই!’ २8२
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৫৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।