পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘হঁ্য, ঠিক তোমার মতনই কালো। মমিয়াই হয় কিসে জানো ? —কালো মানুষের চর্বিতে । ‘সেকি হুজুর s' হ্যা, শোনো তবে— কাফ্রিদের ছেলে কিম্বা যে-কোনো কালো ছেলে কিম্বা হই যদি মুন্দর ছেলে হয় তাদের ওই কাবুলিওয়ালার ভুলিয়ে-ভুলিয়ে ঝুলির ভেতর পুরে এনে একটা মেওয়ার বাগানে ছেড়ে দেয়! সেখানে মনের আনন্দে ছেলেগুলো বেদানা কিসমিস খোবানি আঙর খেয়ে বেড়ায় আর মোটা হতে থাকে ; শেষে মোট হতে হতে তাদের গা থেকে চবি গড়াতে থাকে, তখন সেই কাবুলিওয়ালাদের হাকিম একটা আগুনের কুণ্ডুর ওপর গরম-জল চাপিয়ে সেই মোট ছেলেগুলোব পায়ে দড়ি বেঁধে মুরগির মতো নিচে মুখ ওপরে পা করে ঝুলিয়ে রাখে ; আগুনের তাতে তাদের সেই চর্বি গলে টপটপ করে সেই কড়ায় পড়তে থাকে। যতক্ষণ একফোটা চৰ্বি থাকবে ততক্ষণ কিছুতে তাদের ছেড়ে দেবে না— তাতে তারা মরুক আর বঁাচুক। এমনি করে মমিয়াই তৈরি হয় মসুর । তোমার মতো মিশকালো ওরা কটা পায় ? ধরতে পারলে আজ আর তোমার রক্ষা ছিল না ; নিশ্চয়ই মমিয়াই করে ছেড়ে দিত। ভয়ে দেখলুম মস্তরের ঠোট শাদা হয়ে গেছে, ঘুরে পড়ে আর-কি! আমি তাকে একটু সিরাজি খাইয়ে ঠাণ্ড করলুম। বলতে-বলতে পেশোয়ারে এসে পড়েছি। সেখানে সন্ধে হয়েছে কিন্তু কাবুলিওয়ালার ভিড় দেখে মন্ত্রর কিছুতে সেখানে রাত কাটাতে চাইলে না। আমি কত বোঝালুম যে এখানে ইং.বজের রাজ্য— কাবুলিদের কিছু উৎপাত করার জো নেই, কিন্তু মস্তর কিছুতে বুঝলে না । কাজেই আরো এগিয়ে উড়ে চলতে হল ; একেবারে দিল্লির কুতুবমিনারে এসে সতরঞ্চি নামালুম। মস্তরটা এমনি ভয় পেয়েছে যে দিল্লির চাদনিচকে গিয়ে দুটাে দিল্লির লাড কিনে আনতেও তার সাহস হল না। কী করি, আমরা স্তুবমিনারের চুড়োয় সতরঞ্চি বিছিয়ে শুয়ে পড়লুম। চাদ ন উঠলে অন্ধকারে অব ওড়া যাবে না। さ8S。