দিল্লির হাওয়া বড়ো গরম লাগছে। আমি আস্তে-আস্তে কুতুবমিনারের ওপর থেকে নেমে বাদশাদের একটা তহ খানার ভেতরে গিয়ে ঢুকেছি। মাটির নিচে তহ খান, তার চারদিকে জলের ফোয়ারা। এখন আর ফোয়ারার জল উঠছে না, কিন্তু তবু ঘরখানি বেশ ঠাণ্ড । খানিক বসে থাকতে-থাকতে শুনছি ঢং-ঢং করে রাত বারোটা বাজল অমনি দেখি সব ফেয়ারাগুলো খুলে গেছে— আর ফরফর করে গোলাপজলের ছিটে আমার গায়ে পড়ছে। তহ খানার মাঝখানে একটা মখমলের বিছানা ছিল, আমি তারি ওপর শুয়ে একটু চোখ বুজেছি আর দেখি বুড়ো ঔরঙ্গজেব একটা লাঠি ধরে ঠকঠক করে এসে হাজির ৷ এসেই আমাকে লাঠির খোচা দিয়ে বলছে, ‘কোন হ্যায় রে ? আমিও অমনি তার মুখের ওপর শুনিয়ে দিয়েছি, তম কোন হ্যায় রে ? হাম হিন্দুস্তানকি মালিক ঔরঙ্গজেব বাদশা হ্যায় ! মায়নে তুর্কিস্তানকে পাশা হারুন-অল-রসিদ নবাব খাঞ্জা খাঁ খাজাহান-ই-জাহান্দাব শী বাদশা বোগদাদি হু !" ‘আ ও লড়েঙ্গে ! ‘আও লাড়ে ? বলেই আমরা দুজনে তাল ঠুকতে-ঠুকতে পাঞ্জা কষতে-কষতে একেবারে কুতুবমিনারের ওপরে এসে হাজির । সেখানে এসে বুড়ে ঔরঙ্গজেবট। আমাকে এমনি জাপটে ধরেছে যে ফেলে আর-কি ঠেলে ওপর থেকে নিচে ! এমন সময় মসুর ছুটে এসে মেরেছে তার মাথায় এক কিল। যেমন কিল মারা অমনি তার পাগড়িটা পড়েছে ঠিকরে লাহোরের কেল্লায় । সেখানে রণজিৎ সিং খাটিয়া পেতে ছাতে ঘুযুচ্ছিল ; পাগড়িটা পড়বি তো পড় একেবারে তার মুখের ওপরে, আর পাগড়ির কোহিনুর হীরেটা গেছে তার একটা চোখে বিধে ! এদিকে ঔরঙ্গজেবট তার খালি - ‘থায় হাত বুলুচ্ছে, ওদিকে রণজিৎ সি একগাল হাসতে-হাসতে কোহিমুর হীরেটার দিকে २8d
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৫৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।